TET: প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম স্বস্তি রাজ্যের! শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ!

TET: প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম স্বস্তি রাজ্যের! শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ!

 

 কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগের জট কাটল সুপ্রিম কোর্টে৷ ভোটের মুখে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় বড়সড় স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার৷ শর্তসাপেক্ষে ১৫ হাজার ২৮৪ শূন্যপদে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে আর বাধা থাকল না৷ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট৷ খারিজ চাকরিপ্রার্থীদের আর্জি৷

আজ সুপ্রিম কোর্টের তরফে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় বহাল রাখা হয়েছে৷ খারিজ হয়ে গিয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের আর্জি৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের আপাতত স্বস্তিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ৷ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলা খারিজ হওয়ায় ওই শূন্যপদে নিয়োগে কোন আর বাধা আপাতত থাকছে না৷ গত ৪ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের নিয়োগের পক্ষে রায় দিয়েছিল৷ নিয়োগে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও রয়েছে বেশ কিছু শর্ত৷ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে স্থগিতাদেশ জারি হলেও ডিভিশন বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে শূন্যপদ পূরণের অনুমতি দেয়৷ ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন বেশ কয়েকদিন চাকরিপ্রার্থী৷ চাকরিপ্রার্থীদের সেই আর্জি আজ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্ট৷ তবে, নিয়োগে ছাড়পত্র থাকলেও আপাতত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ভবিষ্যৎ এখনও ঝুলে রয়েছে সিঙ্গেল বেঞ্চের উপর৷

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে প্রক্রিয়া উপর চার সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সিঙ্গেল বেঞ্চ৷ সেই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য৷ ওই মামলার শুনানিতে সিঙ্গেল বেঞ্চে জারি হওয়া স্থগিতাদেশ খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ৷ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হলেও তা আজ খারিজ হয়ে গিয়েছে৷ ফলে, ১৫ হাজার ২৮৪ শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কোন বাধা আর থাকল না৷

সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, অবিলম্বে প্যানেল প্রকাশ করতে হবে৷ সেই তালিকা প্রকাশের পরও গুচ্ছগুচ্ছ অভিযোগ উঠতে থাকে৷ তবে, হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ উঠে গেলেও সিঙ্গেল বেঞ্চের মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালতমুখী হয়ে থাকতেই হবে৷ আগামী ১১ এপ্রিল ওই মামলার শুনানি৷ ১৬,৫০০ শূন্যপদে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের উপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ৷ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জে করে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করে প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদ৷ বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হয়েছে আপিল মামালাটি৷ পাশাপাশি যে সমস্ত প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই চাকরি পেয়ে গেছিলেন, তারাও ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন সিঙ্গেল বেঞ্চের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে৷ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছিল রাজ্য সরকার৷ আদালত জানিয়ে দেয়, দু’সপ্তাহের মধ্যে প্রাথামিকের প্যানেল প্রকাশ করতে হবে৷ উঠে যায় স্থগিতাদেশ৷ প্রত্যেক DI, DPSC, কাউন্সিল অফিসে প্যানেল টানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়৷

২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ওপর যে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজ, সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য৷ সেই মামলার শুনানিতে জয় পেয়েছিল রাজ্য৷ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ১৬ হাজার ৫০০ শূন্যপদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে৷ যাঁরা টেট উত্তীর্ণ এবং যাঁদের প্রশিক্ষণ রয়েছে, একমাত্র তাঁরাই আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছিল পর্ষদ৷ এর পর শুরু হয় নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ মেধা তালিকায় জায়গা পান ১৫ হাজার ২৮৪ জন৷ জানুয়ারি মাসে ৭ দিন ধরে ইন্টারভিউ হয়৷ পর্ষদ সূত্রে খবর, এই নিয়োগের ক্ষেত্রে পার্শ্বশিক্ষকদের ১০% সংরক্ষণ রাখা হয়৷ এছাড়াও এত কম সময়ের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এযাবত কালে কোন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে পারিনি বলেই পর্ষদ সূত্রের দাবি৷  কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার গভীর রাতে প্রকাশিত ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলে দায়ের হয় মামলা৷ নিয়োগে বেনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগে ছ’টি মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে৷ সেই মামলার প্রেক্ষিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করে আদালত৷ এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চ ও সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় রাজ্যের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *