নয়াদিল্লি: গরু পাচারকাণ্ডে কোটি কোটির দুর্নীতি হয়েছে৷ সেই টাকায় ফেঁপে ফুলে উঠেছিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ চোরা চালান চক্র থেকে নগদে প্রাপ্ত প্রায় ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা গচ্ছিত রাখা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডল, তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডল ও তাঁদের বিভিন্ন সংস্থার একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে৷ গরু পাচারকারীদের দেওয়া ঘুষের টাকায় প্রায় ৪৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বানিয়েছিলেন অনুব্রত। এই মামলায় বাবা ও মেয়ে দু’জনেই এখন জেলবন্দি৷ ঠাঁই হয়েছে দিল্লির তিহাড় জেলে৷ পরিস্থিতি এমন যে মমলা লড়ার টাকা পর্যন্ত নেই৷ এই ‘করুন’ পরিস্থিতিতে আদালতের দ্বারস্থ অনুব্রত-কন্যা৷
জানালেন, মামলা লড়ার খরচ জোগাড় করতে পারছেন না তিনি। কারণ, তাঁর মা আগেই মারা গিয়েছেন৷ তিনি এবং তাঁর বাবা অনুব্রত মণ্ডল দু’জনেই তিহাড় জেলে বন্দি। বাড়িতে মামলা লড়ার টাকা জোগাড় করে দেওয়ার মতোও কেউ নেই। তাই তাঁকে ছ’সপ্তাহের জন্য জামিন দেওয়া হোক৷ আর্জি সুকন্যার। আদালতের কাছে তাঁর বক্তব্য, ছ’সপ্তাহের জন্য জামিন পেলে তিনি আইনজীবীদের ফি দেওয়ার অর্থ জোগাড় করতে পারবেন।
সুকন্যার আবেদনের ভিত্তিতে ইডি-র বক্তব্য কী, তা জানতে চেয়েছেন দিল্লি রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বিশেষ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিং। ১০ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি৷ উল্লেখ্য, রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বিচারক রঘুবীর সিং-এর দরবারেই বারবার আর্জি জানিয়েও জামিন পাননি অনুব্রত৷ বাধ্য হয়েই মামলা অন্য বিচারকের বেঞ্চে সরানোর আর্জি জানিয়েছিলেন। দিল্লি হাই কোর্টেও তিনি জামিনের আর্জি জানিয়েছেন। দু’টি মামলারই শুনানি হবে মঙ্গলবার৷
উল্লেখ্য, এর আগে জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন সুকন্যাও। সেই সময় ইডি-র যুক্তি ছিল, সুকন্যাও তাঁর বাবার মতো প্রভাবশালী। তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করতে পারেন। জেরায় অবশ্য সুকন্যা জানিয়েছেন, তিনি গরু পাচারের কিছুই জানতেন না৷ তবে বাস্তবে তিনি কালো টাকা সাদা করার কাজ দেখভাল করতেন বলেই দাবি ইডি-র। তাঁর নামে চালকল-সহ একাধিক সংস্থার মালিকানাও রয়েছে। খাতায়-কলমে স্কুলশিক্ষিকা হলেও তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি রয়েছে৷