কলকাতা: শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু যে অন্যতম ‘মুখ্য চরিত্র’, তা আগেই উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তাঁর বিরুদ্ধে দাখিল চার্জশিটে বলা হয়েছে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা মানিক ভট্টাচার্যের কাছে নিয়ে যেতেন এই সুজয়। যদিও কী ধরনের বার্তা, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার ‘কালীঘাটের কাকু’ র বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ করা হল চার্জশিটে৷ ইডি-র অভিযোগ, খাস কালীঘাটে তৃণমূলের দলীয় দফতরে বসে চাকরি বিক্রির চক্র চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র৷
শুক্রবার ‘কাকু’র নামে এই চার্জশিট পেশ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, জেরায় তদন্তকারী অফিসারদের সামনে একথা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ সুজয়। চার্জশিটেই ইডি জানিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল সুজয়ের। শুধু তাই নয়, মূলত তাঁর সুপারিশেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট পেয়েছিলেন মানিক।
সম্প্রতি দায়ের করা চার্জশিটে ইডি আরও জানিয়েছে, কালীঘাটের তৃণমূল অফিসে বসেই চোরা পথে আসা চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন ‘কাকু’। সেখানে বসেই কথা হত নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের দুই বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বেসরকারি কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডলের সঙ্গে৷ ২০১২-১৪ সালের টেট চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা কুন্তল ও তাপসের মাধ্যমে তিনিই মানিকের কাছে পাঠিয়েছিলেন বলেও চার্জশিটে দাবি করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
সুজয় যে ‘কালীঘাটের কাকু’ নামে মূল চক্রের অলিন্দে, সে কথা প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন তাপস। পরে জানা যায়, তিনি কাজ করতেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থার দফতরে। তবে সুজয় জোর গলায় দাবি করেছেন, তাঁর ‘সাহেব’ অভিষেককে কোনও দিন ছোঁয়া যাবে না৷ নিয়োগ দুর্নীতি চক্রে অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ‘কাকু’৷ খাস কালীঘাটে বসে যে ভাবে তিনি চাকরি বিক্রির চক্র চালাতেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ইডি৷