দিনে ৮৩ জনের সমস্যার সমাধান করেছেন মমতা! ‘গাঁজাখুরি’ বলছেন সুজন

যদিও ঘণ্টায় ৯০টি অভিযোগ, আবার ফি ঘণ্টায় ৮৩টি অভিযোগের নিষ্পত্তির তথ্যকে সাফল্য হিসাবেই দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘এটা একটা বিরাট সাফল্য। বাদ বাকি যা পড়ে আছে সিএমও থেকে কো-অর্ডিনেশন করে দফতরগুলি মিটিয়ে নেবে।’

8e0e139bfabd784c7b548bc19d1ac832

কলকাতা: প্রতি ঘণ্টায় রাজ্যবাসীর ৯০টা অভিযোগ জমা পড়ছে নবান্নে। সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যবাসীর অনাস্থাসূচক এই তথ্য দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘সিএমও-তে অভিযোগ সেল করে কাজ করি, সেখানে ৭ লক্ষ ৮৯ হাজার অভিযোগ পেয়েছিলাম আমরা।’ ২০১৯ সালের ১০ জুন রাজ্যবাসীর জন্য ‘গ্রিভান্স সেল’ তৈরি করে অভিযোগ জানাতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন দফতরে মানুষের প্রায় ৮ লক্ষ অভিযোগ জমা পড়েছে।

বছরে ৭ লক্ষ ৮৯ হাজার অভিযোগ মানে, প্রতিদিন গড়ে ২১৬১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। ঘণ্টার হিসাবে সেটাই দাঁড়ায় ৯০। মমতা বন্দ্যোপাধায় জানিয়েছেন, ‘মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক পিবি সেলিম আমাকে রিপোর্ট দিয়েছে। তাতে ৫৪ হাজার অভিযোগ বাকি রেখে সব কেস সমাধান করে দিয়েছি। ৯৩ শতাংশ অভিযোগ সমাধান হয়ে গেছে।’ সেক্ষেত্রে ওপরে দেওয়া মমতা’র বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ৭ লক্ষ ৩৫ হাজার অভিযোগের নিষ্পত্তি মানে, দিনে ২ হাজার ১৩টির ওপর অভিযোগ সমাধান। অতএব ঘণ্টায় ৮৩ জনের সমস্যা মিটেছে!

আরও পড়ুন: তৃণমূলের গুরুদায়িত্বে বাম-কংগ্রেসের ঋতব্রত-ওমপ্রকাশ! প্রাক্তন তৃণমূলীরাও এখন ‘বিশুদ্ধ বিজেপি’

মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া এই তথ্যকে বামফ্রন্ট পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ‘গাঁজাখুরি’ বলে কটাক্ষ করেন। এ বিষয়ে সুজনের মত জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকদিন ২ হাজার কেস সমাধান করেছে সরকার! তার জন্য সচিবালয়ের আধিকারিকদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন। সরকার তো বঙ্গবিভূষণ, বঙ্গভূষণ সম্মান চালু করেছিল। এমন কাজ যাঁরা করতে পেরেছেন তাঁদের জন্য এবার তাহলে বঙ্গপদ্মবিভূষণ সম্মান দিন। তাতে পদ্মটাও রাখা হবে! আর কত গাঁজাখুরি কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী। ধরা পড়ে যাচ্ছেন যে।’

আরও পড়ুন: ২১-এর নির্বাচনে মেরুকরণ! NRC-র কথা তুলে নিজেই বুঝিয়ে দিলেন মমতা!

যদিও ঘণ্টায় ৯০টি অভিযোগ, আবার ফি ঘণ্টায় ৮৩টি অভিযোগের নিষ্পত্তির তথ্যকে সাফল্য হিসাবেই দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘এটা একটা বিরাট সাফল্য। বাদ বাকি যা পড়ে আছে সিএমও থেকে কো-অর্ডিনেশন করে দফতরগুলি মিটিয়ে নেবে।’ এ প্রসঙ্গে কী কী অভিযোগ এসেছিল, এবং সরকার তার কী সমাধান করেছে, মুখ্যমন্ত্রীকে তা অবিলম্বে তথ্য প্রকাশ করে ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন বিরোধী নেতা সুজন চক্রবর্তী। 

সম্প্রতি নবান্ন লাগোয়া আরও একটি প্রশাসনিক ভবনের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। নয়া ভবনের নাম, ‘উপান্ন’। নতুন ভবনে উঠে আসবে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়। এখানে থাকবে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের কন্ট্রোল রুম। এদিন নতুন ভবনেই মৎস্য, ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর, কৃষি দফতর, উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে গত ন’বছরে ডিম, মাছ, মাংস থেকে পেঁয়াজ উৎপাদন কী গতিতে বেড়েছে তার উল্লেখ করেন। জানা যায়, মুরগির উৎপাদন ২০১১ সালে ৫ লক্ষ টন থেকে বেড়ে ৯ লক্ষ টন হয়েছে। অন্যদিকে পেঁয়াজ চাষ রাজ্য ৪ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টনে নিয়ে গেছে। কিন্তু এদিন কৃষি দফতরের কাছ থেকে আলুর হিসাব জানতে চাননি মমতা। উত্তর প্রদেশের পর আলু উৎপাদনে রাজ্যের নাম আসে যেখানে, সেখানেই মানুষকে আলু চড়া দামে কিনতে হচ্ছে এই করোনা পরিস্থিতিতে। এ বিষয়ে জানা যায়নি কিছুই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *