তমলুক: প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে শাসক দলের দ্বন্দ্ব একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ রাজনীতিতে যোগ করেছে আলাদা মাত্রা। প্রায় প্রতিদিনই উভয় পক্ষের আক্রমণ প্রতি-আক্রমণে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। সেই আবহেই এদিন ফের একবার বাকযুদ্ধে জড়ালেন দুই শিবিরের নেতৃবৃন্দ।
নন্দীগ্রাম শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারীর যোগ দানকে এদিন তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। বুধবার রাতে শহিদদের স্মরণে নন্দীগ্রাম গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের বক্তব্য, ভয় পেয়েছেন শুভেন্দু বাবু, তাই রাতের অন্ধকারে চোরের মতো নন্দীগ্রাম আসতে হয়েছে তাঁকে।
বস্তুত, এদিন নন্দীগ্রাম শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে গভীর রাতে সেখানে সভা করেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। দলীয় কার্যের ব্যস্ততার কারণেই এমন সময় সভা করতে হয়েছে, জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতি বছর আসি। এবারও এসেছি। সকালে নেতাই বেরিয়ে যাব। তাই এখন এসেছি। দল-মত-বর্ণ পেরিয়ে এই দিন পালন করি। আগামীদিনেও তাই করব। এত রাতেও যাঁরা এসেছেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি আপনাদের হয়ে এখানে এসেছি।’’ কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর এই ‘অজুহাত’কে বিশেষ আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। নাম না করে তাঁকে কটাক্ষ করেছেন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি নেতা, তৃণমূলের শেখ সুফিয়ান। তাঁর বক্তব্য, রাতের অন্ধকারে, চোরের মতো এসেছেন তিনি।
এদিনের সভা থেকে নন্দীগ্রামের পুরোনো ইতিহাস স্মরণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, ‘‘ওইদিন সকাল বেলায় আমি সেলিমের দেহ তুলেছি। অনেকে অনেক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে লড়াই করেছি।’’ নিজের পরিচয় সম্বন্ধে প্রাক্তন মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আমার সবথেকে বড় পরিচয় আমি নন্দীগ্রামের আপনজন।’’ শুভেন্দু অধিকারীর সভার পাল্টা হিসেবে বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় সভা করে তৃণমূলের ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। তাঁদের অনুষ্ঠানে শহীদদের উদ্দেশ্যে মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ছাড়াও এদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা শেখ সুফিয়ান, শহিদ জননী পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধায়িকা ফিরোজা বিবি সহ শাসক শিবিরের নেতারা।