এক দলে থেকেও ছিল লড়াই, এবার ভোটের ময়দানে সুজিত-সব্য ডার্বি

এক দলে থেকেও ছিল লড়াই, এবার ভোটের ময়দানে সুজিত-সব্য ডার্বি

কলকাতা: শুধু নন্দীগ্রামই নয়, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার একাধিক কেন্দ্রই হাইভোল্টেজ। সে কেন্দ্রগুলিতে টক্কর হবে সেয়ানে সেয়ানে। এমনই এক কেন্দ্র উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত বিধাননগর। যেখানে একদিকে রয়েছেন তৃণমূল নেতা তথা দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু,  অন্যদিকে রয়েছেন তারই একসময়ের সহকর্মী বিধাননগর পুরসভার প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। দুজনেই দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। দু’জনই এক সময়ের পারস্পরিক সহযোদ্ধা হলেও দুজনের মধ্যে বহুদিন ধরেই চাপা প্রতিদ্বন্দিতা রয়েছে।

সুজিত বসু এবং সব্যসাচী দত্ত, দুজনেই বিধাননগর এলাকার দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ। এক সময় একই দলের হয়ে রাজনীতি করলেও দুজনের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না। তৃণমূলে থাকাকালীন বিধাননগর এলাকার দখলদারি নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই বিবাদ চলত। ২০০৯ সালে বেলগাছিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জিতে প্রথমবার তৃণমূলের বিধায়ক হন সুজিত। কিন্তু ২০১১ সালে বেলগাছিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের অবলুপ্তি ঘটলে তিনি বিধাননগর কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ান। ২০১১ এবং ২০১৬ নির্বাচনে বিধাননগর থেকে তিনিই নির্বাচনে জয় লাভ করেন। এরই মাঝে তাকে রাজ্যের দমকলমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সুজিত বসুর এই অভূতপূর্ব উন্নতি দেখে মনে মনে ঈর্ষান্বিত হন সব্যসাচী দত্ত।

২০১৫ সালে সব্যসাচীকে বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বিতর্কিত এই মেয়র পদ নিয়েই মূল গণ্ডগোলের সূত্রপাত। গোপন সূত্রে জানা যায়, সুজিত বসুরও এই মেয়র পদের উপর নজর ছিল। সব্যসাচী সেই পদে বসলে দুজনের মধ্যে বিবাদ আরও বাড়ে। রাজারহাট, নিউটাউন, লেকটাউন এলাকার দখলদারি নিয়ে দুজনের মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর চরমে পৌঁছয়। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালের শেষের দিকে রাজনৈতিক গুরু মুকুল রায়ের হাত ধরে সাধের মেয়র পদ ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে যোগ দেন সব্যসাচী।

তবে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা সত্ত্বেও দুই পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদদের মধ্যে সখ্যতা ছিল। করোনা অতিমারীর সময়ে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু করোনা আক্রান্ত হলে তার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ফোন করেন সব্যসাচী। কিন্তু সেই সময় ফোন ধরতে পারেননি সুজিত। তাই দ্রুত সুস্থতা কামনা করে মেসেজ করে দেন সব্যসাচী। পরে অবশ্য সুজিত পাল্টা ফোন করেন সব্যসাচীকে এবং দুজনের মধ্যে দীর্ঘক্ষন বার্তালাপ হয়। ব্যক্তিগত জীবনে খানিক সৌজন্যতা দেখালেও রাজনৈতিক ময়দানে একে অপরকে এক চুল জমিও ছাড়তে রাজি নয় দুই রাজনীতিবিদ। ফলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিধাননগর কেন্দ্র একটি হাইভোল্টেজ লড়াইয়ের সাক্ষী হতে চলেছে।  -ফাইল ছবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *