শিক্ষিকার জরায়ু কাজ করে? রাজ্যকে জানাতে হবে বুকের মাপ-সহ শারীরের তথ্য!

যদিও এই নিয়ে বিতর্কের মাঝে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ ও শারীরিক পরীক্ষা দেওয়ার শর্ত বাতিল করা হবে বলে নবান্নের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

 

কলকাতা: গর্ভাশয় কাজ করছে কি না এবার শিক্ষক হতে চাইলে সরকারকে বাধ্যতামূলক ভাবে জানাতে হবে বহু শিক্ষক পদপ্রার্থীদের৷ বাংলায় শিক্ষিকা হতে গেলে এখন থেকে রাজ্যকে জানাতে হবে মহিলাদের শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ সচল আছে কি না, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য৷ এমনকী, চাকরিপ্রার্থী বাংলাদেশি না পাকিস্তানি তাও করতে হবে উল্লেখ৷ রাজ্য সরকারের আজব জেগেট বিজ্ঞপ্ত ঘিরে ইতিমধ্যেই চরম নিন্দার ঝড় উঠেছে শিক্ষামহলে৷

শিক্ষিকাদের গর্ভাশয় কাজ করছে কি না, তা জানাতে চেয়ে বাধ্যতামূলক করে রাজ্য সরকার ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি এন্ড কলেজ ২০১৭’ বিল নামের একটি গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশ করেছে৷ সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, মহিলা প্রার্থীর গর্ভাবস্থায় বা জরায়ু কাজ করছে কি না, কারও হার্নিয়া আছে কি না কিংবা বুকের মাপ কত? ইত্যাদি শারীরবৃত্তীয় তথ্য খুঁটিনাটি জানাতে হবে৷ এমনকী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন নাকি পাকিস্তান, নেপাল অথবা অন্যকোন দেশের বাসিন্দা তাও সেখানে জানতে চাওয়া হয়েছে এই গেজেটে৷ এই গেজেট ঘিরে শিক্ষক শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে৷ শিক্ষক মহলের বক্তব্য, এভাবে শারীরবৃত্তীয় তথ্য কীভাবে জানতে চাওয়ার সাহস দেখাল সরকার? অবিলম্বে বাতিল হোক এই গেটেজ৷

বিলটি যখন ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিধানসভায় আনা হয়েছিল৷ বিরোধীদের তীব্র বিরোধিতার জেরে বিলটি স্থগিত করা হয়৷ তখন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কিছু ভাষাগত পরিবর্তন আনা হবে৷ কিন্তু, পুরভোটের আগে ফের সেই বিলটি আরও একবার খুঁচিয়ে তোলা হয়েছে৷ বিলে উল্লেখ রয়েছে, নিয়োগের এক বছরের মধ্যে প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মেডিক্যাল পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে৷ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষিকার ও শিক্ষাকর্মীদের পুলিশের মুখোমুখি হতে হবে৷ ফর্ম ৪ নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছে, শিক্ষক পদে আবেদনকারী যদি পাকিস্তান বাংলাদেশ-নেপাল বা অন্য কোন দেশের বাসিন্দা হন সেক্ষেত্রে তার ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে৷ ৫ নম্বর পয়েন্টে জানানো হয়েছে, প্রার্থী গত পাঁচ বছর যেখানে ছিলেন, সেখানকার পরিস্থিতি বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে৷ আগে শিক্ষকদের নিয়োগ পত্র যাচাই ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে যদি দেখা যায় যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক শারীরিক পরীক্ষা ও পুলিশি মুখোমুখি হতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাহলে তিনি শিক্ষক হিসেবে মর্যাদা পাবেন না৷ 

যদিও এই নিয়ে বিতর্কের মাঝে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ ও শারীরিক পরীক্ষা দেওয়ার শর্ত বাতিল করা হবে বলে নবান্নের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × four =