কলকাতা: শরীর চর্চা করতে গিয়ে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হন ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়৷ সৌরভের অসুস্থ হওয়ার খবরে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে জিম বা শরীর চর্চায় যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আরও সতর্ক হচ্ছে জিম কর্তৃপক্ষ৷ জিম প্রশিক্ষকরা নিয়মিত ও পরিমিত আহার গ্রহণের বিষয়টিকে জোর দিয়ে দেখছেন৷ জিমে যাওয়ার আগে খাবারের বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত, এমনটাই মনে করছেন বেশিরভাগ জিম প্রশিক্ষক।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অসুস্থ হওয়ার পর তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় চিকিৎসা৷ তিনটি বদ্ধ ধমনীর মাঝে একটি স্টেন্ট বসানো হয়। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ তবে এর আগেও ‘মহারাজ’ বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলেন ২০১২ সালে আইপিএলে পুনে ওয়ারিয়ার্সের হয়ে খেলার সময়৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতেও একবার বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলেন সৌরভ৷
ভার উত্তোলন প্রশিক্ষক শান্তনু চক্রবর্তী এই বিষয়ে বলেছেন, ‘‘এই ঘটনায় আমি ব্যথিত। এই বয়সেও সৌরভকে এতটা ফিট দেখে আমি নিজে তার থেকে অনুপ্রাণিত হই। কিন্তু তার এই বয়সে হৃদরোগ আমায় যথেষ্ট চিন্তিত করে তুলেছে।’’ কোর জিমের প্রধান প্রশিক্ষক এই ব্যাপারে বলেছেন, ‘‘নতুন কাউকে জিমে ভর্তি করার আগে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে তাকে পর্যবেক্ষণ করি৷ আর তারপর আমরা ধীরে ধীরে তাকে অতি সাধারণ কয়েকটি ধাপে উন্নীত করি৷’’ তিনিও আহার গ্রহণের ব্যাপারে জোর দিয়ে বলেছেন, পরিমিত আহার গ্রহণ ভীষণ জরুরি৷
প্রশিক্ষক গগণ স্বচ্ছদেব এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি যে ফিটনেসের ব্যাপারে জিমে যাওয়া যদি ৩০% গুরুত্বপূর্ণ হয়, তবে সঠিক ও পরিমিত খাবার খাওয়া সেক্ষেত্রে ৭০% জরুরি। তাই আমরা প্রত্যেককে এই বিষয়ে সচেতন করি এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের উপদেশ দিই।’’ তিনি আরও বলেন, বয়সের গন্ডি চল্লিশ পেরিয়ে গেলে সেক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যায় ব্যায়াম বন্ধ করা উচিত এবং চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই ঘটনার বিষয়ে চিকিৎসকরা একে ‘ট্রিপল ভেসেল ডিজিজ’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন, যেখানে জরুরি ধমনীর মধ্যে রক্ত সরবরাহ ‘প্লাক’ দ্বারা রোধ হয় এবং হৃদরোগের সম্মুখীন হয় মানুষ। আর এই বিষয়ে সৌরভের পিতা চণ্ডীদাস গঙ্গোপাধ্যায়ের হৃদরোগে মৃত্যু হওয়া যথেষ্ট ভাবাচ্ছে সকলকে। তবে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সরকার জানিয়েছেন, ব্যায়াম বা জিম করতে গিয়ে শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হলে তাকে সেটি তৎক্ষণাৎ বন্ধ করা উচিত এবং চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত৷