অভিষেকের সাংসদ পদ খারিজের দাবি জানিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি সৌমিত্রর

অভিষেকের সাংসদ পদ খারিজের দাবি জানিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি সৌমিত্রর

কলকাতা:  আদালতের বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবি জানালেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ৷ এই মর্মে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ভারতের গণতন্ত্র দাঁড়িয়ে রয়েছে বিচারব্যবস্থার উপর। সেই বিচারব্যবস্থার উপর আঘাত হানতে চাইছেন অভিষেক। আগামী সোমবার এই বিষয়ে থানায় এফআইআর দায়ের করবেন বলেও জানিয়েছেন সৌমিত্র৷ চুপ থাকেনি তৃণমূলও৷ পাল্টা সৌমিত্রের অতীত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসক দল। তোপ দেগে বলে,  সৌমিত্র নিজে জেলাশাসক এবং শীর্ষ আধিকারিকদের তুইতোকারি করে কথা বলেন৷ সেই সৌমিত্র সংবিধান বাঁচানোর কথা বললে, তাতে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

এদিকে, শনিবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে সৌমিত্র লিখেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে সংবিধানকে জোরজবরদস্তি দমন করতে চাইছে তৃণমূল সরকার। এ রাজ্যে সংবিধানের অস্তিত্ব আক্রান্ত৷ শুক্রবার ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাই কোর্টের বিরুদ্ধে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা অবমাননাকর।’’ এই যুক্তিতেও অভিষেকের সাংসদপদ খারিজের আবেদন জানিয়েছেন সৌমিত্র। আদালত অবমাননার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।

অভিষেককে ব্যক্তিগত আক্রমণও করেন সৌমিত্র৷ তাঁকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বিষ্ণপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘এক জন সাংসদ হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলবেন, আমি হলে গুলি চালিয়ে দিতাম! কখনও কোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে যা খুশি বলবেন! এতে ভারতের গণতন্ত্র ভেঙে পড়বে।’’  সৌমিত্র আরও বলেন, ‘‘স্পিকারের কাছে অনুরোধ, যে সাংসদ এই ধরনের কথা বলেন, তাঁকে সাসপেন্ড করা হোক।’’ এখানেই থামেননি তিনি। অভিষেককে জেলে ভরার দাবিও জানিয়েছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, ‘‘অভিষেক সব থেকে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ। তাই বিচারব্যবস্থাকে আঘাত করতে চাইছেন। বিচারপতিকে আঘাত করতে চাইছেন। সোমবার এফআইআর করব।’’

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের পর রাজনৈতিক হিংসার শিকার নন্দীগ্রামের ১৪ জন জখম তৃণমূল কর্মীকে এসএসকেএম হাসপাতালে দেখতে যান অভিষেক। শুক্রবার সেখান থেকে বেরোনোর সময় হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়েই বিচারব্যবস্থার একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেক বলেন, ‘‘বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সমাজবিরোধীদের রক্ষাকবচ দিচ্ছেন।’’ সেই সঙ্গে অভিষেক এ-ও বলেন, যদি এই বক্তব্যের জন্য তাঁকে জেলে যেতে হয়,  তিনি ১০ হাজার বার জেলে যেতেও রাজি! কিন্তু তিনি সত্য বলবেনই। উল্লেখ্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দেওয়ার প্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য করেন তিনি৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − eight =