sonia gandhi
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস যেন বিজেপি বিরোধী প্রধান দলগুলির সঙ্গে জোট করে। এই বার্তাই দিলেন কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতৃত্ব সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী। রাজনৈতিক মহল মনে করছে মূলত পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি এবং পাঞ্জাব কংগ্রেস নেতৃত্বের উদ্দেশে এই বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল এবং দিল্লি ও পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের বহু দিন ধরেই রাজনৈতিক শত্রুতা রয়েছে। সেই জায়গা থেকে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের আরও ভরাডুবি হবে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। ঠিক সেই জায়গা থেকে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দলের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে নীচুতলার কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন,”আজকে আমি কংগ্রেসের পুরনো কর্মীদের বলব, যদি সত্যিই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়তে চান, তাহলে কংগ্রেস উপযুক্ত জায়গা নয়। বিজেপিতে আসুন। কংগ্রেস কোনও ভাবে তৃণমূলের কাঁধে হাত দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। খড়কুটোর মতো ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে”। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে কংগ্রেসের বহু কর্মী-সমর্থক খুন হয়েছেন এই অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের নীচুতলার কর্মী-সমর্থকদের বিজেপিতে আসার বার্তা দিয়েছেন সুকান্ত।
সূত্রের খবর, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর ও মালদা দক্ষিণ কেন্দ্র ছাড়া কংগ্রেসকে আর কোনও আসন ছাড়তে চাইছে না তৃণমূল। সেই সঙ্গে বাড়তি হিসেবে তারা পুরুলিয়া আসন কংগ্রেসকে ছাড়লেও ছাড়তে পারে। খেয়াল করলে দেখা যাবে এই তিনটি কেন্দ্রেই গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পরাজিত হয়েছে। সেই জায়গা থেকে তৃণমূলের কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র দুটি বা তিনটিতে যদি কংগ্রেস লড়ে তাহলে গোটা রাজ্যে দলটাই তো বসে যাবে। যে সামান্য পাতে দেওয়ার মতো সংগঠন কিছু কিছু অঞ্চলে কংগ্রেসের রয়েছে সেটাও ধ্বংস হয়ে যাবে। সেই ভোট অবধারিতভাবে বিজেপির দিকে চলে যাবে বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন। অন্যদিকে সিপিএমকে একটি আসনও তৃণমূল ছাড়তে চায় না। তবে কংগ্রেস যদি তৃণমূলের থেকে কোনও আসন পেয়ে সেটি সিপিএমকে ছেড়ে দেয় তাতে আপত্তি করবে না বাংলার শাসক দল। রাজনৈতিক মহল মনে করছে তৃণমূল যদি সত্যিই এই পথে হাঁটে এবং তা মেনে নেয় প্রদেশ কংগ্রেস ও আলিমুদ্দিন, তাহলে রাজ্যে কংগ্রেস ও বামেদের অস্তিত্ব কার্যত আর থাকবে না। কিন্তু কংগ্রেস হাইকমান্ড তৃণমূলের সঙ্গে আসন রফার বার্তা দিলে প্রদেশ নেতৃত্বের কিছু করার থাকবে না। অর্থাৎ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব রীতিমতো উভয় সংকটে পড়েছেন। আর যথারীতি এই পরিস্থিতির ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। তাই বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট আসন রফা নিয়ে যে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তার অভিঘাত পশ্চিমবঙ্গে কতটা পড়ে, বা আদৌ পড়ে কিনা এখন সেটাই দেখার।