উচ্চশিক্ষাও এনে দিতে পারেনি চাকরি, অবসাদগ্রস্ত ছেলে খুন করল বাবা-মাকে

গত কয়েকদিন ধরে ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন আশেপাশের প্রতিবেশীরা।

হাওড়া: গত কয়েকদিন ধরে ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন আশেপাশের প্রতিবেশীরা। অবশেষে তারা পুলিশে খবর দেন, পুলিশ আসার পরে যে ঘটনা সামনে আসে তা মর্মান্তিক। বাবা-মাকে খুন করেছে তাদের নিজেদের ছেলে। ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে তাদেরই পচা গলা মৃতদেহ। এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে দম্পতির অভিযুক্ত ছেলেকে। চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে হাওড়া শিবপুরের কৈপুকুর এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, বাবা-মাকে মারার পর অভিযুক্ত শুভজিৎ নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তার হাতে কাটা চিহ্ন রয়েছে। সে নিজে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে, বাবা-মাকে খুন করার পর সে আত্মহত্যা চেষ্টা করেছিল কিন্তু সফল হয়নি। পরিবারের বাকি সদস্যদের দাবি, শুভজিৎ উচ্চশিক্ষিত ছিল কিন্তু কোন চাকরি জোটাতে পারেনি এতদিন। সেই কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বেশ কয়েক মাস ধরে। একই সঙ্গে আর্থিক অনটনের চাপ ছিল তাদের। পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে হয়তো চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে শুভজিৎ এমনটাই মত তাদের। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ অনুমান করেছে, মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েই বাবা-মাকে খুন করে শুভজিৎ, তারপর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করে, কিন্তু অসফল হয়।

প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, বেশ কয়েকদিন ধরে দুর্গন্ধ আসার পর শুভজিতের ফ্ল্যাটে গিয়ে ডাকাডাকি করা হয়। দরজা ধাক্কালেও কেউ সাড়া দেয়নি। অবশেষে কোন উপায় না দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে ঘরের দরজার তালা ভেঙে ঘরের ভেতর থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। শুভজিতের জামাতে ও রক্তের দাগ লেগেছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। সেই প্রেক্ষিতেই খুনে অভিযুক্ত হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে। পরিবার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আর্থিক অনটন এবং মানসিক অবসাদে ভোগার কারণেই পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ হয়ে গেছিল শুভজিৎ এবং তার পরিবারের। দিন দিন চিন্তা এবং অবসাদ আরো বাড়ছিল। মানসিক অবসাদ এর কবলে পড়ে নিজের বাবা-মাকে খুন করেছে শুভজিৎ, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর এমনই অনুমান পুলিশের। যদিও এই খুনের পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে শিবপুর থানার পুলিশ। উল্লেখ্য, মৃত দম্পতির নাম প্রদ্যোৎ বসু এবং গোপা বসু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 8 =