অম্বানীদের অন্দরমহল কেমন? চার দেওয়ালের মধ্যে থাকা কাহিনি এবার প্রকাশ্যে

অম্বানীদের অন্দরমহল কেমন? চার দেওয়ালের মধ্যে থাকা কাহিনি এবার প্রকাশ্যে

mukesh ambani

মুম্বই: ভারত তো বটেই, বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হলেন মুকেশ আম্বানী৷ আভিজাত্যের চাকচিক্যে মোড়া মুকেশ-নীতা আম্বানীদের জীবন৷ সেই ছটায় চোখ ধাধিয়ে যায় আমআদমির৷ তাঁদের জীবন নিয়ে কৌতুহলেরও খামতি নেই৷  কী ভাবে জীবন কাটে এই ধনকুবেরদের? সকলেরই কমবেশি জানার ইচ্ছা আছে বৈকি৷ মনে উঁকে দেয় অনেক প্রশ্ন৷ তাঁরা কি সকালে উঠে আর পাঁচজন ভারতীয়ের মতোই চায়ের কাপে চুমুক দেন? চোখ বোলান খবরের কাগজে? ধনকুবেরদের প্রাসাদের চার দেওয়ালের অন্দরের ছবিটা ঠিক কেমন?

যদিও সাধারণ মানুষের পক্ষে রাজপ্রাসাদের অন্দরের খবর জানাটা একেবারেই সহজ নয়৷  এটা অনেকটা বামন হয়ে চাঁদের হাত বাড়ানোর মতো৷ তবে জানেন কি, এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা এই ধনী পরিবারের সদস্য না হয়েও এই প্রাসাদের অন্দরমহলে ঢোকার সুযোগ পেয়েছেন। দেখেছেন, কী ভাবে কাটে রাজমহলের অষ্টপ্রহর।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আলোচনা ভীষণ ভাবে ভাইরাল হয়েছে। সেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন ভারতীয় শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী। মুম্বইয়ে তাঁর আকাশ ছোঁয়া বাসভবন অ্যান্টেলিয়ায় যাঁরা কোনও না কোনও সময় কাজ করেছেন, তাঁরাই তুলে ধরেছেন তাঁদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা।

নেটপাড়ায় রেডিট নামে একটি প্ল্যাটফর্মে এক নেটাগরিক প্রথম এই প্রশ্নটি তুলেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘আমার জানতে ইচ্ছে করছে, এই প্ল্যাটফর্মে কি এমন কেউ আছেন, যাঁর অম্বানীদের বাসভবন অ্যান্টেলিয়ায় কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে?’’

প্রশ্ন আরও ছিল৷ জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘‘অম্বানী পরিবার আদৌ কি বছরের বেশির ভাগ সময় এই বাড়িতে থাকেন? যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের বেতনই বা কেমন? তাঁরা কি অম্বানীদের বিষয়ে কোনও অজানা তথ্য আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পরবেন?’’ অনেকেই এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন৷ তবে নাম গোপন রেখে৷

‘মোহাত্তার’ নামে এক অ্যাকাউন্ট হোল্ডার নিজেকে অ্যান্টেলিয়ায় অগ্নিনির্বাপণ নিরাপত্তার কাজ যুক্ত এক অস্থায়ী কর্মী হিসাবে পরিচিয় দিয়ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের কাজ মূলত ছিল গ্রাউন্ড ফ্লোরে। আমরা সেখান থেকে খুব বেশি হলে আরও দু’টি তল উপরে উঠতে পারতাম৷ কিন্তু সেখানে আমরা আম্বানী পরিবারের কাউকে কখনও দেখতে পাইনি৷ যাঁদের সঙ্গে দেখা হয়, তাঁরা মূলত বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।’’

কেমন ছিল বেতন? ওই কর্মী জানান, পারিশ্রমিকের বিষয়ে অম্বানীরা দরাজহস্ত। কাজ সংক্রান্ত সমস্ত নথি ঠিকঠাক থাকলে তাদের নিয়মনীতি মেনে কাজ হলে পারিশ্রমিক নিয়ে ভাবতে হতো না৷ আম্বানীরা যে তাঁদের কর্মীদের পাশে সবসময় রয়েছে, সে কথাও কারও অজানা নয়৷

আবার লেজিটিমেট ওয়ার্ক ৫৩২৯ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়েছে, ‘‘আমার এক বন্ধু অ্যান্টেলিয়ায় কাজ করত। তার কাছেই শুনেছি, নীতা অম্বানী নাকি অনেক সময় দিনে ঘুমিয়ে কাটাতেন আর কাজ করতেন রাত জেগে৷ এমনকি, কখনও-সখনও রাতেই সারতেন জরুরি মিটিং৷’’ তিনি আরও বলেন, কখনও আবার গোটা পরিবার একসঙ্গে বসে মুভি দেখার পরিকল্পনা করেন৷ যা শুনে ওই পরিবারটিকে বেশ মিষ্টি লেগেছে৷ 

অর্চিশ শাহ নামের একটি অ্যাকাউন্ট ইউজার আবার লেখেন, ‘‘আমি হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত৷ এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার সময় এক বার অ্যান্টেলিয়ায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। একটি অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রতি ছ’ঘণ্টা কাজের জন্য আমাদের বরাদ্দ ছিল আড়াই হাজার টাকা৷ তিন দিনের কাজ করে সাড়ে সাত হাজার টাকা পেয়েছিলাম। যা বছর দু’য়েক আগে এক জন স্নাতক পড়ুয়ার কাছে অনেক।’’

আবার পেশেন্ট বক্স ৯৫৭২ নামের অ্যাকাউন্ট ইউজার লিখেছেন, ‘‘বছরের অধিকাংশ সময়েই অম্বানীরা অ্যান্টেলিয়ায় থাকেন না। থাকেন বিদেশে৷ অ্যান্টেলিয়ায় মূলত থাকেন অম্বানির বড় ছেলে এবং পুত্রবধূ৷ বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁরা অ্যান্টেলিয়ায় আসেন।’’ যদিও এই ব্যক্তি কোন সূত্র থেকে এই তথ্য জানতে পেরেছেন, তা স্পষ্ট করেননি৷  

ট্রিকি স্যান্ডউইচ ০ নামে এক রেডিট ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, তাঁর এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় অ্যান্টেলিয়ায় কর্মরত। তাঁৎ ওই আত্মীয় আম্বানীদের গাড়ির দেখাশোনার কাজে নিযুক্ত। তাঁর কাছ থেকেই শোনা কথায় ভিত্তিতেই তিনি লিখেছেন, ‘‘সবাই জানেন অ্যান্টেলিয়ার ছ’তলার রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা৷ কিন্তু অনেকেই জানেন না, এই বাড়ির গোটা একটি তল বরাদ্দ রয়েছে শুধুমাত্র অম্বানীদের গাড়ির দেখভালের জন্য। মুকেশ আম্বানীর বড় ছেলে আকাশ অম্বানীর ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য৷ 

ইলেকট্রনিক বিল ২৬৪ নামের এক অ্যাকাউন্ট ইউজারের কথায়, মুকেশ অম্বানী তাঁর প্রাক্তন বস৷ তিনি বসের হয়ে একটি বিশেষ টিমে কাজ করতেন। ওই দলের সদস্যরা মুকেশকে এমডিএ (মুকেশ ধীরুভাই অম্বানীর শর্ট ফর্ম) নামে সম্বোধন করতেন। তিনি এক বার বলেছিলেন, ভারতের ধনীকুবের হলেও কাজ করার সময় মনেই হয় না তিনি এতবড় সাম্রাজ্যের প্রধান। মিটিংয়ে মাঝেমধ্যেই ভেলপুরী, ইডলি, বড়াপাওয়ের মতো খাবারদাবার অর্ডার দিতেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × three =