মুম্বই: নাতনির পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য মাথার উপরের ছাদটাই বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি, বৃদ্ধ জীবন কাটছিল রোজগারের একমাত্র বাহন অটোতে। কিন্তু একুশ শতকের পৃথিবীতেও এখনও বেঁচে আছে মানবতা, এখনও স্বার্থের সংঘাতকে দূরে সরিয়ে মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মানুষই, আরো একবার প্রমাণিত হল সেকথা। বৃদ্ধ অটোচালকের পাশে দাঁড়িয়ে অর্থসাহায্যে নিয়ে এগিয়ে এলেন নেটিজেনরা।
সপ্তাহ দুয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে ভাইরাল হয়েছিল অটোচালক দেশরাজ জোরসিং বিয়াদুর গল্প। দুই ছেলের মৃত্যুর পর ভাঙা সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাঁধে। সামান্য অটো চালিয়ে যে সংসারের খরচ তোলার পর বাড়তি আর কিছুই থাকে বৃদ্ধের কাছে। তাই যখন শুনেছিলেন নাতনির উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজন টাকার, মাথায় বাজ ভেঙে পড়েছিল তাঁর। তবু জীবন যুদ্ধে হার মানতে না চাওয়া দেশরাজ জোরসিং খুঁজেও বের করেছিলেন অন্য উপায়। একমাত্র সম্বল বাড়িটুকুকে বিক্রি করে দিয়ে জোগাড় করেছিলেন নাতনির পড়াশোনার খরচ। এ কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর শুধু আপ্তবাক্য নয়, আক্ষরিক অর্থেই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন নেট নাগরিকরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়ে ২৪ লক্ষ টাকা তুলে বৃদ্ধের হাতে দিয়েছেন নেটিজেনরা, এমনটাই শোনা যাচ্ছে সূত্রের খবরে। চেক হাতে পেয়ে আপ্লুত দেশরাজ জোরসিংয়ের আবেগ যেন বাগ মানতে চাইছে না। উচ্ছ্বসিত গলায় তিনি বলেছেন, “সমাজে কিছু ভালো মানুষ রয়েছেন বলেই বাঁচতে ইচ্ছে করে।”
বস্তুত, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশরাজের গল্প ভাইরাল হয়েছিল ‘হিউম্যানস অব বম্বে’র হাত ধরে।জানা গিয়েছিল মেধাবী নাতনির পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ি বিক্রি করে কোনো আক্ষেপ নেই বৃদ্ধের। “আমার কাছে বাড়ির চেয়ে নাতনির স্বপ্ন পূরণটাই বেশি দামী”, বলেছিলেন তিনি। ঘটনা সামনে আসতেই ফেসবুকে শুরু হয় অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ। গুঞ্জন রাত্তি নামে এক ব্যক্তি দেশরাজের নামে তহবিল সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন। ‘হিউম্যানস অব বম্বে’র তরফ থেকেই এদিন দেশরাজের হাতে তুলে দেওয়া হয় ২৪ লক্ষ টাকার চেক। এর ফলে মাথার উপরের ছাদটি ফিরে পাবেন বৃদ্ধ।