২১-এর ভোটের আগে ‘প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার’ কথাই মনে করালেন ইয়েচুরি

২১-এর ভোটের আগে ‘প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার’ কথাই মনে করালেন ইয়েচুরি

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে দুই রাজনৈতিক শক্তির মধ্যেই মেরুকরণের চেষ্টা চলছে। বামপন্থীদের শক্তি হচ্ছে জনগণের দাবিতে আন্দোলন। বক্তা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির দু’দিনের অধিবেশন সোমবার শেষ হয়েছে। ওই বৈঠকেই তিনি এই কথা বলেছেন।

আলোচনার উপসংহারে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র বলেন, রাজ্যের পরিস্থিতিতেও পরিবর্তন এসেছে। মেহনতী মানুষের জন্য বামপন্থীরাই লড়াই করছে। এই লড়াইবের পরিসর বৃদ্ধি করতে হবে। তার মাধ্যমে বামপন্থী, গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ব্যাপক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সেই ঐক্যের ভিত্তিতে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই হবে। বুথ স্তরে সাংগঠনিক প্রস্তুতি জোরদার করতে হবে। এই লড়াইয়ে বিরাট ভূমিকা পালন করবেন তরুণরা। ইয়েচুরির কথায়, খাদ্য কাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে বিকল্প নীতিকে জনগণের সামনে উপস্থিত করতে হবে। প্রচারের স্তর থেকে প্রত্যক্ষ আন্দোলনের স্তরে উন্নীত হতে হবে। একাজ করতে পারলে শ্রেণিশক্তির ভারসাম্য বদলে বামপন্থীদের সম্পর্কে আস্থার মনোভাব তৈরি করা সম্ভব হবে।

এই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিমান বসু। পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি সভায় উপস্থিত ছিলেন। রাজ্য কমিটির সভায় রিপোর্ট পেশ করেন রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র। রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি ও আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজ্য কমিটি বলেছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি-কে পরাজিত করে বিকল্প বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শ্রেণি ও গণ-আন্দোলনের সংগ্রামের ধারাগুলিকে আরও জোরদার করার সাথে সাথে জনগণের অভ্যন্তরে তীব্রতর রাজনৈতিক প্রচার ও সুসংহত সাংগঠনিক বিন্যাসের মাধ্যমেই এই লক্ষ্য অর্জিত হবে। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে শ্রেণিশক্তির ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটানোর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। রাজ্য কমিটির সভায় গণফ্রন্টের স্বাধীন ও নিজস্ব কর্মসূচি ছাড়াও জনজীবনের জরুরী দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট ২৫.৬৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএম পেয়েছিল ১৯.৭৫ শতাংশ ভোট। সেই ভোট ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নেমে প্রায় ১৪-১৫ শতাংশে এসে দাঁড়ায়। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গিয়েছে বামফ্রন্ট ৬.২৪ শতাংশ ভোটে দৌড় শেষ করেছে। জোটেনি একটিও লোকসভা আসন। অন্যদিকে, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে ১৮টি আসন দখল করেছে বিজেপি। বামপন্থী, মমতা বিরোধী মানুষ যে বিজেপিকে পছন্দ কপড়ছে, তা বোঝার জন্য ভাল ছাত্র হওয়ার প্রয়োজন নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *