সিঙ্গুর: এক সময় সিঙ্গুর ছিল রাজ্যে পালা বদলের অন্যতম পীঠস্থান৷ সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন প্রশস্ত করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের পথ৷ ২০০৮ সালে সিঙ্গুর থেকে টাটারা চলে যাওয়ার পর যাওয়ার পর হয়েছে ৩টি বিধানসভা ভোট৷ ২০১১, ’১৬-র পর ২০২১৷ ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়েছিল সিঙ্গুরের আন্দোলন৷ মুখ্যমন্ত্রীর তখতে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তবে সিঙ্গুরের পাশাপাশি নন্দীগ্রামের ভূমি উচ্ছেদ আন্দোলনও গেঁথে দিয়েছিল তাঁর জয়ের ভিত্তি প্রস্তর৷
আরও পড়ুন- ‘আসনের সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে!’ চার দফাতেই আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে মোদীর
সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের জেরেই এখান থেকে চলে গিয়েছিল টাটারা৷ বন্ধ হয়েছিল তাঁদের স্বপ্নের প্রোজেক্ট ন্যানো কার৷ এর পর থেকে আর শিল্পের মুখ দেখেনি সিঙ্গুর৷ গত শনিবার আরও একবার জনপ্রতিনিধি বেছে নিতে ভোট দিয়েছে সিঙ্গুরের মানুষ৷ আর এত বছর পর বাজেমেলিয়া এবং গোপালপুর গ্রামের মানুষের কথায়, অনুর্বর জমিতে গজিয়ে ওঠা ঝোপঝাড়ের মধ্যে বেড়ে ওঠা কাঁঠাল গাছের চেয়ে, অটোমোবাইল প্লান্ট থেকে বেরিয়ে আসা গাড়িগুলিকে দেখতে অনেক বেশি ভালো লাগত৷
এক সময় জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন বছর ৫৬-র লক্ষ্মীকান্ত ঘোষ৷ জমি অধিগ্রহণের ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি৷ লক্ষ্মীকান্তবাবু মনে করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের ক্ষমতায় এলে এখানে অটো মোবাইল প্লান্ট গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবেন তিনি৷ কিন্তু কেন এই পরিবর্তন? জবাবে তিনি বলেন, প্রতি বছর কৃষি থেকে আয় কমছে৷ কিন্তু এখানে কারখানা হলে চাকরি পাবে আমার ছেলে-মেয়ের মতো বহু যুবা৷
আরও পড়ুুন- ‘হঠাৎ গলা ধরে বেধড়ক মারতে শুরু করে এক জওয়ান!’ বলছে ১৪ বছরের ছেলেটা
লক্ষ্মীকান্তবাবু আরও বলেন, ন্যানো প্লান্ট নির্মানের জেরে আমার এক একর জমির উর্বরতা বহুগুণ কমে গিয়েছে৷ এখন সেভাবে প্রায় কিছুই ফলন হয় না৷ কৃষকদের এই সমস্যার কথা বিবেচনা করেই ক্ষমতায় আসার পর একটা প্রকল্প চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সিঙ্গুর আন্দোলনে যোগ দেওয়া সাড়ে ৩ হাজার অনিচ্ছুক কৃষককে মাসে ২ হাজার টাকা করে দেন তিনি৷ সঙ্গে পাই ১৬ কেজি চাল৷ একইভাবে শিল্পের জন্য ৯ কাঠা জমি দেওয়া ৫৩ বছরের স্বপন মাঝিও মনে করেন শিল্পই এখন বাঁচার পথ৷ শিল্প হলেই কর্মসংস্থান হবে৷ খেয়ে পড়ে বাঁচবে আগামী প্রজন্ম৷