নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনে যতটা হিংসা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল বাস্তবটা তাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। আর রাজ্য জুড়ে যখন মৃত্যু মিছিল চলছে তখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কালীঘাট অভিযানের ডাক দিলেন। সেই সঙ্গে বর্তমান অরাজক পরিস্থিতিতে গণ অভ্যুত্থানের ডাকও দিলেন তিনি।
শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে হাড়হিম করা সন্ত্রাস দেখল রাজ্যবাসী। যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শুভেন্দু। শুভেন্দু বলেন, ‘‘দুটো রাস্তা রয়েছে। জনগণের অভ্যুত্থান। চলো কালীঘাট। ইটগুলো খুলি। গুলি করুক। প্রথম দশ-বিশ জন মরবে। আমি থাকতে রাজি আছি। তার পরে বাংলার দশ কোটি লোক বেঁচে যাবে। আর দ্বিতীয় হল ৩৫৬ অথবা ৩৫৫ করে নির্বাচন।’’ আর কেন্দ্রকেও প্রচ্ছন্ন বার্তা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির কে কী ভাববে, অন্য কে কী বলবে আমার জানার দরকার নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে বাংলার পরিত্রাণের জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে এখানে এসেছি।’’ সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় সরকার ভাবছেন কি না জানি না, এই রাজ্যে ৩৫৬ অথবা নির্বাচনের সময়ে ৩৫৫ জারি করে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ না করতে পারলে পশ্চিমবঙ্গে কোনও ভোট হতে পারে না।’’ উল্লেখ্য বহুদিন ধরেই শুভেন্দু রাজ্যে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করে আসছেন। একাধিকবার রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিও করেছেন তিনি। কিন্তু সেই বিষয়টি নিয়ে কার্যত ‘স্পিকটি নট’ থেকেছেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিষয়টিকে শুভেন্দু যে একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না সেটাই তাঁর কথায় স্পষ্ট হয়েছে। একই ভাবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ এখনই চাই। সেটা ৩৫৫ হতে পারে ৩৫৬ হতে পারে। কোনটা হবে সেটা কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করুন। যেটা নাড্ডাকে জানিয়েছি।”
সিপিএম-কংগ্রেসের বহুদিন ধরেই অভিযোগ যে, তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সেটিং রয়েছে। তাই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বারবার কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করলেও তাতে কাজ হচ্ছে না বলে কটাক্ষ করেই চলেছে তারা। আর সবচেয়ে বড় কথা শুভেন্দু পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে যেভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সম্পর্কে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে কি বিরোধী দলনেতার ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে? তাই তিনি এভাবে বিরক্তি বা উষ্মা প্রকাশ করছেন? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। তাই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের আবেদনে সাড়া দিয়ে আগামী দিনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনও কড়া পদক্ষেপ করে কিনা এখন সেটাই দেখার।