একাধারে IPS, IAS, চিকিৎসক! রয়েছে ২০টি ডিগ্রি, দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত মানুষকে চেনেন?

একাধারে IPS, IAS, চিকিৎসক! রয়েছে ২০টি ডিগ্রি, দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত মানুষকে চেনেন?

de302e45ba0b1dde244090e7f60e1486

 কলকাতা: ছোটবেলায় হাতেখড়ি থেকে শুরু৷ তারপর ধাপে ধাপে এগিয়ে চলে পড়াশোনার পাঠ৷ স্কুল, কলেজ তারপর বিশ্ববিদ্যালয়৷ গতানুগতিক পড়াশোনা শেষে কেউ বেছে নেন চাকরির পথ, কেউ আবার যুক্ত হন গবেষণায়৷ তবে ডিগ্রি পাওয়া মোটেও সহজ বিষয় নয়৷ এর জন্য লাগে কঠোর পরিশ্রম৷ ভালো মতো একটা ডিগ্রি অর্জন করতে গিয়েই অধিকাংশ পড়ুয়াকে হিমশিম খেতে হয়। স্নাতকোত্তরের পর আরও উচ্চশিক্ষিত হতে গেলে আরও কঠিন হয় পথ৷ কিন্তু জানেন কি আমাদের দেশে এমন এক জন ছিলেন যিনি পড়াশোনা করেছিলেন ৪২টি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাঁর কাছে ছিল ২০টি আলাদা বিষয়ের ডিগ্রি। তিনি আর কেউ নন, ভারতের সব থেকে শিক্ষিত ব্যক্তি শ্রীকান্ত জিচকার। দেশের সব চেয়ে বেশি শিক্ষিত ব্যক্তি হওয়ার পাশাপাশি মাত্র ২৬ বছর বয়সে বিধায়কও হন তিনি।

১৯৫৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর নাগপুরে একটি মরাঠা পরিবারে জন্ম শ্রীকান্ত জিচকারের৷  দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর নাগপুরের একটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রথমে এমবিবিএস এবং পরে এমডি করেন তিনি। চিকিৎসা বিজ্ঞানে সফল ভাবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর, শুরু হয় আইন নিয়ে পড়াশোনা৷  আইনে স্নাতক পাশ করার পর আন্তর্জাতিক আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

তবে এতটুকুতেই থামতে চাননি শ্রীকান্ত৷ আইনের পাঠ শেষ করার পর আরও উচ্চশিক্ষিত হওয়ার জেদ চেপে বসে তাঁক। ঠিক করেন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে পড়াশোনা করবেন। সেই মতো শুরু হয় পড়াশোনা৷ সফল ভাবে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পাশ করার পর সাংবাদিকতায় স্নাতক হন শ্রীকান্ত। তালিকা কিন্তু আরও দীর্ঘ৷ এর পর সংস্কৃতে ডক্টরেট অফ লিটারেচার (ডি’লিট)-ও পান জিচকার। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে ছিল সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইংরেজি, সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনস্তত্ত্ববিদ্যার মাস্টার্স ডিগ্রি। উল্লেখ্য বিষয় হল, শ্রীকান্ত বেশির ভাগ পরীক্ষাতেই প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় স্বর্ণপদকও পেয়েছিলেন তিনি৷  

দেশের অন্যতম কঠিন প্রবেশিকা পরীক্ষা হল ইউপিএসসি৷ সেই পরীক্ষাতেও সফল হন শ্রীকান্ত। যে পরীক্ষায় এক বার উত্তীর্ণ হতেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় পড়ুয়াদের, সেই পরীক্ষায়  দু’বার বসে দু’বারই উত্তীর্ণ হন তিনি। প্রথম বার আইপিএস এবং পরে আইএএস হন৷  কিন্তু দু’ক্ষেত্রেই মাঝপথে কর্মজীবন শেষ করেন। এর পর আমলার চেয়ার ছেড়ে পা রাখেন রাজনীতির দুনিয়ায়৷ ১৯৮০ সালে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক নির্বাচিত হন। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৬। দেশের তৎকালীন সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক ছিলেন তিনি। পরে মারাঠা রাজনীতিতে প্রভাবশালী মন্ত্রী হিসাবেও নিজের পরিচয় গড়ে তোলেন৷  

 

কলা বিভাগের বিভিন্ন ক্ষেত্রেও সফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন শ্রীকান্ত। চিত্রাঙ্কন, ফটোগ্রাফি এবং অভিনয়েও একাধিক ডিগ্রি রয়েছে তাঁর ঝুলিতে৷ শুধু জ্ঞান অর্ঝনই নয়, বাচ্চাদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে নাগপুরে একটি স্কুলও খোলেন এই মেধাবী। এই স্কুলে রয়েছে ভারতের অন্যতম বড় লাইব্রেরি। যেখানে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। ২০০৪ সালের ২ জুন একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দেশের সবচেয়ে শিক্ষিত মানুষ শ্রীকান্ত জাচকারের। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫১ বছর।
 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *