কলকাতা: শোভন চট্টোপাধ্যায়কে এখনও পর্যন্ত বিধানসভায় লড়াই করার টিকিট না দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। কিন্তু, রাজ্য বিজেপির অন্দরের যা খবর, শোভনের ব্যক্তিগত জীবনের অশান্তি তার বিধানসভায় লড়াই করার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের লড়াই লড়ছেন। অন্যদিকে, বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক সমাজে এবং সামাজিক মাধ্যমে চর্চার অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা শোভনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিজেপি এই নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাঁচতে চেয়েছে।
বিজেপি তাকে অনেক কিছুই দিয়েছিল। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাকে মেয়র এবং মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। বিজেপিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় যা চেয়েছিলেন তা পেয়েছিলেন। রাজ্য বিজেপি তাকে যোগ্য সম্মান দিয়ে কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। রাজ্য কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন শোভন। এই পরিস্থিতিতে আর পিছিয়ে যাওয়ার জায়গা ছিল না শোভনের। মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য কমিটির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। ওই তালিকায় ১১০ জনের মধ্যে একজন শোভন। আবার দলকে পাল্টা কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। কথা ছিল বিধানসভা নির্বাচনে তা তিনি ফিরিয়ে দেবেন। কিন্তু নিজের কেন্দ্র থেকে প্রার্থী না হওয়া এবং বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী না করার জন্য দল ছেড়েছেন তিনি। পার্টি সূত্রে খবর, বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে শোভনের জেতার সম্ভাবনা দেখা যায়নি। দীর্ঘদিন এলাকায় না যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন তা বিজেপিও দেখেছে। শোভনের থেকে একজন তারকা প্রার্থীরাই সুযোগ বেশি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৯ এর ১৪ অগাস্ট তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে এসেছিলেন শোভন। তারপর থেকে বিজেপিতে নানা উঠাপড়ার মধ্যেই টিকে রয়েছেন তিনি। কিন্তু, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে অনেকেই তাকে দলের সামনের সারিতে দেখতে চেয়েছিলেন। দলে থেকেও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ কেন পিছনের সারিতে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে। গত এক বছর বিজেপিতে থেকে নিজের রাজনৈতিক জীবনে কী উন্নতি করলেন শোভন? বিজেপিতে তিনি কেন এসেছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে এত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এক রাজনীতিকের জীবন কি শুধু কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক রক্ষা করতেই শেষ হয়ে যাবে?
বিজেপির অন্দরে কথা উঠেছে, শোভনের মত অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বার বার নিজের বান্ধবীর জন্য পার্টিতে বিরাগভজন হয়েছেন – এমনটা বিশেষ দেখা যায়না। একটা সময় মনে হয়েছে তিনি নিজে তার জায়গাকে লঘু করছেন। পার্টির একাংশ মনে করেছেন শোভনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পিছনে ১০০ শতাংশ তার মতামত নেই। তার বান্ধবীর মতামত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তা বিজেপিতে অনেকেই পছন্দ করেননি।