বি আর চোপড়ার মহাভারত কে না দেখেনি! সে সময় আপামর ভূ ভারত বি আর চোপড়ার মহাভারতে মজে ছিলেন। সেই মহাভারতের অন্যতম চরিত্র ছিল পান্ডবদের ‘শকুনি মামা’। যেখানে সদর্পে অভিনয় করেছিলেন গুফি পেন্টাল। তার অভিনয় মনে পড়লে আজও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। এহেন সুদক্ষ অভিনেতা আজ ইহলোক ছেড়ে চলে গেলেন। মৃত্যুকালীন তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
গুফি পেন্টালের মৃত্যুর খবর সর্বপ্রথম নিশ্চিত করেন তাঁর ছেলে। সোমবার সকালে অভিনেতার ছেলে হ্যারি পেন্টাল জানান, “আমি গভীর শোকের সঙ্গে একথা জানাচ্ছি যে, আমার বাবা গুফি পেন্টাল প্রয়াত হয়েছেন।” বয়সজনিত অসুস্থতার কারণেই প্রয়াত হন গুফি। এ কথাও জানিয়েছেন তাঁর ছেলে হ্যারি। এরপরই শোকের ছায়া পড়ে, বলি পাড়া থেকে শুরু করে অনুরাগী মহলে। কিছুদিন আগে প্রথম অভিনেত্রী টিনা ঘাই গুফির অসুস্থতার কথা প্রকাশ্যে আনেন। তারপর আজ শোনা গেল তাঁর মৃত্যুর খবর। যা শুনে ভেঙে পড়েছেন ভক্তেরা।
সকলের চোখেই এখন ফিরে আসছে মহাভারতের সেই ‘শকুনি মামা’ চরিত্রের দৃশ্যগুলি। কারণ এই চরিত্রে অভিনয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন গুফি। এরপর বহু সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি ধারাবাহিক পরিচালনাও করেছেন গুফি। পরিচালনা ও ধারাবাহিকে অভিনয়, একসঙ্গে চালিয়ে গিয়েছেন ছোটপর্দার ‘শকুনি মামা’।
১৯৭৫ সালে ‘রফু চক্কর’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় গুফি পেন্টালের। এর পর ‘দিল্লাগি’, ‘দেশ পরদেশ’, ‘সুহাগ’সহ আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। তাঁকে বাহাদুর শাহ জাফর, মহাভারত, কানুন, ওম নমঃ শিবায়, সিআইডি, শশশাহ কোই হ্যায়, দ্বারকাধীশ ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, রাধাকৃষন-এ দেখা গিয়েছে। শেষবার তাঁকে পর্দায় দেখা গিয়েছিল ‘জয় কানহাইয়া লাল কি’ ধারাবাহিকে।
জানেন কি গুফি পেন্টাল অভিনয় জগতে পদার্পণ করার আগে ছিলেন একজন ইঞ্জিনিয়ার। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন। ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে অভিনয়কেই নেশা আর পেশা বানিয়েছিলেন গুফি। টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভের লোভনীয় চাকরিও ছেড়ে দেন শুধু মাত্র অভিনয়ের টানে! ১৯৪৪ সালে জন্ম এই বর্ষিয়ান অভিনেতার। গুফি কিন্তু আসল নাম নয় মহাভারতের ‘শকুনি মামার’। গুফি পেন্টালের আসল নাম সর্বজিৎ পেন্টাল। তবে সর্বজিৎ পেন্টাল আসল নাম হলেও তিনি অভিনয় জগতে গুফি নামেই পরিচিত। আর সেই পরিচিতি টুকুই এখন থেকে গেল।