আর চক্রান্তের অভিযোগ করছেন না শাহজাহান! কেন এই ভোলবদল?

আর চক্রান্তের অভিযোগ করছেন না শাহজাহান! কেন এই ভোলবদল?

নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি নাকি কিছুই করেননি। যে সমস্ত অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে তার সবটাই নাকি মিথ্যা। চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আর সবটাই হয়েছে বিজেপির ইশারায়। সদ্য এমনই মন্তব্য করতে শোনা দিয়েছে  সন্দেশখালির ‘বাঘ’ শেখ শাহজাহানকে। কিন্তু নিজের সেই অবস্থান থেকে হঠাৎই সরে এলেন তিনি। রবিবার স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কারও বিরুদ্ধেই তাঁর কোনও অভিযোগ নেই। রবিবার সকালে নিয়ম মাফিক শাহজাহানকে নিয়ে জোকার ইএসআই হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে যাচ্ছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেই সময় সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন, কারা তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন? তাঁরা কী বিজেপির কেউ? জবাবে শাহজাহান কারও নামই উল্লেখ করেনি। উল্টে বলেছেন এ বিষয়ে তাঁর কোনও অভিযোগ নেই। অত্যন্ত নীচু স্বরে হতাশ ভঙ্গিতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে,”আমার কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই।” স্বাভাবিকভাবেই সন্দেশখালির একদা ‘ডন’ শাহজাহানের এমন ইউ-টার্ন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হঠাৎই কেন তিনি নিশ্চুপ হয়ে গেলেন তা নিয়ে নানা চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এটাও কী কোনও ছক? নাকি পরিস্থিতির চাপে এমন বদল ঘটেছে?

 

গত শুক্রবার শাহজাহানকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন তিনি। নিজের গ্রেফতারির জন্য বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাহজাহানকে বলতে শোনা গিয়েছিল,”সব মিথ্যা কথা। কেন এগুলো বলছেন? সব দলাল, বিজেপির দালাল। ভোটের সময়ে কারা এজেন্সি ব্যবহার করে জানেন না? এসব ষড়যন্ত্র।” তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ভোলবদল হল শাহজাহানের। রাজনৈতিক মহল মনে করছে এর পিছনে বিশেষ একটি কারণ রয়েছে। কী সেই কারণ?

 

শাহজাহানকে তৃণমূল ছয় বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করেছে। শাহজাহানের দাপটে তৃণমূলের পুরনো নেতাকর্মীদের একাংশ বহুদিন ধরেই দলে কোণঠাসা হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এখন আবার নতুন করে দলে জায়গা পেতে শুরু করেছেন তাঁরা। অর্থাৎ শাহজাহান বুঝতে পারছেন তিনি সাসপেন্ড হয়ে থাকার কারণে সন্দেশখালিতে দলের রাশ চলে যাচ্ছে অন্যের হাতে। সম্ভবত সেই কারণেই হতাশ হয়ে পড়েছেন একদা সন্দেশখালির দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই তৃণমূল নেতা। বুঝে গিয়েছেন হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়ার আশা অত্যন্ত কম।

 

তাই ক্রমশ গুটিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বুঝে গিয়েছেন তৃণমূল তাঁর পাশে আর থাকবে না। তাই যেভাবে চক্রান্ত বা ফাঁসানোর কথা বলছিলেন সেটা যে বিশ্বাসযোগ্য হবে না, সেটা বুঝেই কার্যত নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছেন তিনি। আসলে এভাবেই চাকাটা কিন্তু ঘুরে যায়। গ্রেফতার হওয়ার পরেও তাঁর শরীরী ভাষায় যে হম্বিতম্বি দেখা যাচ্ছিল সব উধাও হয়ে গিয়েছে। রাতারাতি ‘বাঘ’ থেকে যেন হয়ে গিয়েছেন ‘ইঁদুর’। তবে ফের তিনি পরিস্থিতি বুঝে চক্রান্ত বা ফাঁসানোর অভিযোগ তোলেন কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 4 =