এগরাঃ বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে এগরার খাদিকুলে মৃত্যুমিছিল! পুলিশের বিরুদ্ধে এখনও জ্বলছে ক্ষোভের আগুন। এরমধ্যে আবারও প্রশ্নের মুখে পড়ল পুলিশের ভুমিকা। অভিযোগ, ভয়াবহ বিস্ফোরণকাণ্ডে লঘু ধারায় মামলা করা হয়েছে। এফআইআরে বিস্ফোরক আইনের ধারা উল্লেখ না করে আইপিসি এবং ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্টে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। কেন লঘু ধারায় মামলা? কাদের আড়াল করার চেষ্টা করছে পুলিশ? উঠছে প্রশ্ন।
মঙ্গলবার দুপুরে এগরার খাদিকুল গ্রামে ভানু বাগের বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের জেরে ৯ জনের মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুমিছিলের পরেও বিস্ফোরক আইনের কোনও ধারা মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। বিস্ফোরণের ঘটনায় বাজি কারখানার মালিক ভানু, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নামে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আইপিসি-র ১৮৮, ২৮৬, ৩০৪ ধারা এবং ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্টের ২৪ ও ২৬ নং ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। কিন্তু, এফআইআরে বিস্ফোরক আইনের ধারা যোগ করা হয়নি। অভিযুক্তের জামিনের রাস্তা প্রশস্ত করতেই লঘু ধারায় মামলা দিয়েছে পুলিশ! উঠছে এমন অভিযোগও। এর নেপথ্যে কৌশলগত অবস্থান রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল। তাঁদের অনুমান, সরাসরি এনআইএ-তদন্ত এড়াতেই বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হয়নি। কারণ, আর্মস অ্যাক্ট, এক্সপ্লোসিভ অ্যাক্ট, UAPA-ধারায় মামলা হলে NIA-এর সেই মামলা নিতে সুবিধা হয়। এই সব ধারায় মামলা হলে তার রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে পাঠাতে হয় রাজ্যকে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক প্রয়োজন বুঝে সরাসরি NIA-এর হাতে মামলার তদন্তভার দিতে পারে। কিন্তু, অন্য ধারায় মামলা হলে আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। অর্থাৎ সরাসরি মামলার তদন্তভার এনআইএ-র হাতে আসেনা।
স্থানীয়রা জানান, বিস্ফোরণের পরই সপরিবারে এলাকা ছেড়ে পালান বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু। অভিযুক্ত ওড়িশায় গা ঢাকা দিয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। ভানু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্রেস করে তাঁদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সিআইডি, ফরেন্সিক টিম। শুরু হয়েছে নমুনা সংগ্রহের কাজ৷ এদিকে, বিস্ফোরণকাণ্ডের জেরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এগরা থানার আইসিকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্তে নেমে বুধবার দু’জনকে গ্রেফতার করেছে এগরা থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম দেবসুন্দর জানা ও তপন দেবনাথ। তাদের জেরা করা হচ্ছে।