scientists
নয়াদিল্লি: সাত মহাদেশের বাইরেও রয়েছে আরও এক মহাদেশ। যার নাম জিল্যান্ডিয়া। এই মহাদেশে খুব যে আড়ালে আবডালে ছিল, তেমনটা নয়। তবে দীর্ঘদিন খোঁজ মেলেনি তার। অবশেষে মিলল খোঁজ। আঁকা হল পৃথিবীর অষ্টম মহাদেশের মানচিত্র। এটাও জানা গেল পৃথিবীর কতটা জুড়ে ছিল এই অষ্টম ‘মহাদেশ’। এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং অ্যান্টার্কটিকার পর আবিষ্কৃত হল জিল্যান্ডিয়া।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজ থেকে ৮ কোটি ৩০ লক্ষ বছর আগে এক অতিমহাদেশের অস্তিত্ব ছিল এই পৃথিবীতে। কিন্তু সেটি সময়ের স্রোতে ভেঙে যায়৷ খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে তৈরি হয় নতুন মহাদেশ। গড়ে ওঠে জিল্যান্ডিয়া। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন, এই অষ্টম মহাদেশের বয়স কম করে ১০০ কোটি বছর। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে সেটি এক সময়ে জলের নীচে তলিয়ে যায়৷ মাথা তুলে অস্তিত্বের জানান দেয় গুটি কয়েক ছোটখাটো দ্বীপ। তারই মধ্যে একটি হল নিউজিল্যান্ড। একই আকৃতির আরও কিছু দ্বীপ রয়েছে এর চার পাশে। কিন্তু সেগুলি গোটা মহাদেশের মাত্র ৬ শতাংশ। ১৮.৯ লক্ষ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই মহাদেশের ৯৪ শতাংশই সমুদ্রে নিমজ্জিত। আজকের নিউজিল্যান্ডের নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, বল’স পিরামিড কিংবা নিউ ক্যালেডোনিয়া-সহ এই সবটা নিয়েই তৈরি হয়েছে অস্টম মহাদেশ জিল্যান্ডিয়া৷
১৬৪২ খ্রীষ্টাব্দে এই মহাদেশের কথা উল্লেখ করেছিলেন এক ডাচ নাবিক। তার পর ৩৭৫ বছরের খোঁজ৷ অবশেষে ২০১৭ সালে ভূতত্ত্ববিদেরা খুঁজে পান জিল্যান্ডিয়া৷ নয়া মহাদেশ আবিষ্কারের পর আরও ছ’বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে জিল্যান্ডিয়ার সীমারেখা এঁকে ফেললেন বিজ্ঞানীরা। সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, প্রায় ৫০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এই মহাদেশের বিস্তৃতি। যার আরেক নাম তে রিউয়া মাউয়ি। ভূবিজ্ঞানীদের দাবি, এই নতুন মহাদেশে লুকিয়ে রয়েছে বিপুল পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি। আর তার পরিমাণ এতটাই বেশি যে, ভবিষ্যতে বিশ্বের জ্বালানি চাহিদার অনেকটাই মেটাতে পারবে।
জিল্যান্ডের নতুন মানচিত্রের বিশদ প্রকাশিত হয়েছে টেকটনিক্স নামের একটি জার্নালে। আপাতত বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের তলায় ডুবে থাকা জিল্যান্ডিয়ার পাথর ছেঁচে পুরনো ইতিহাস খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছেন