কলকাকা: রাজ্যে ভোট পূর্ববর্তী আবহে রাজনৈতিক উত্তাপের পারদ ক্রমশ উর্দ্ধমুখী। শিক্ষক নিয়োগ তথা শিক্ষা মহলে নানা দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। কিন্তু সেই বিরোধিতার আবহে প্রাথমিক শিক্ষার প্রশিক্ষণ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে শিক্ষা দফতর। তবে তা নিয়েও শিক্ষক মহলে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ।
গত ৬ জানুয়ারি রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছিল শিক্ষা দফতর। সেই মর্মে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা গড়ার নির্দেশ দিয়ে জেলাভিত্তিক শিক্ষা আধিকারিকদের কাছে লিখিত দেওয়া হয়েছিল। আগামীকাল থেকেই শুরু হবে সেই প্রক্রিয়া। কিন্তু শিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগ নিয়ে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যের শিক্ষক মহলে। তাঁদের বক্তব্য, গত ১০ মাস ধরে যখন রাজ্যে সরকারি স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে, তখন প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কোনও মানে হয় না।
রবিবার নিজেদের অসন্তোষের কথা জানিয়ে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফ থেকে একটি চিঠি লেখেন সতীশ সাউ৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘এই ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে শিক্ষক মহল ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে৷’’ একইসঙ্গে রাজ্যে করোনা আবহে প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারের অবজ্ঞার দিকটিও তুলে ধরেছেন ওই শিক্ষক নেতা৷ শিক্ষক মহলের অভিযোগ, গত ১০ মাস ধরে প্রাথমিক স্তরে পঠনপাঠন একেবারেই বন্ধ। মাত্র একবার পড়ুয়াদের ‘মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাও অত্যন্ত নিম্ন মানের বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। সতীশ সাউয়ের কথায়, ‘‘প্রায় কিছু না শিখেই সমস্ত ছাত্রছাত্রী বর্তমান শিক্ষাবর্ষে উত্তীর্ণ হয়ে গেল।’’ কোনও বিষয়েই শিক্ষকদের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা করা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা।
রাজ্যে বেসরকারি স্কুলগুলিতে প্রাথমিক মাধ্যমিক সমস্ত স্তরেই ভালোমতো চলছে অনলাইন ক্লাস। করোনা আবহে তাদের পঠনপাঠনে খামতি নেই৷ কিন্তু সরকারি ক্ষেত্রে এই অবহেলা দেখা গেছে, যা নিয়ে হতাশ অভিভাবকরাও। এহেন পরিস্থিতিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষা দফতরের নির্দেশ ক্ষোভে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। ‘কী উদ্দেশ্যে এই প্রশিক্ষণ?’ প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক মহল৷