নয়াদিল্লি: সোমবার সুশান্ত সিং মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রয়াত সুশান্ত সিং রাজপুতের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। প্রয়াত অভিনেতা বাবার ত্যাগ করা এফআইআর পাটনা থেকে মুম্বাইতে স্থানান্তরিত করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন যে এই তদন্ত বিহার পুলিশের হাতে থাকলে সেখানে স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতার থাকবে না বলেই ভয় পাচ্ছেন তিনি।
মঙ্গলবার সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু মামলায় রিয়া চক্রবর্তীর নতুন আবেদনের (১০ আগস্ট, সোমবার) শুনানি পর্বে রিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয় যে আগের অনুরোধ অনুসারে তিনি সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তটি সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) এ স্থানান্তরিত করতে চান কিনা? জবাবে রিয়ার আইনজীবী শ্যাম দিবান বলেন যে তাঁরা প্রথমে মামলাটি মুম্বাই পুলিশ এবং তারপরে সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করতে চায়। রিয়ার দ্বিতীয় আবেদনে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিনেত্রীর দাবি, সুশান্তের মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ি করা হচ্ছে।
রিয়া চক্রবর্তীর আইনজীবীর বক্তব্য, যে রিয়া সুশান্তকে ভালোবাসতেন এবং তাঁর মৃত্যুর পর মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কিন্তু, তাকে স্যোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে ট্রোলের শিকার হতে হয়েছে। এক্ষেত্রে তাকে অনেকটাই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আদালতে অনুরোধ জানিয়েছেন। শ্যাম দিবান আরও বলেন, বিহারে ঘটনাটি ঘটেনি, তবুও সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা কে কে সিংহ পাটনার রাজীব নগর থানায় এফআইআরটি নথিভুক্ত করেছিলেন। এছাড়াও, তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে ঘটনার ৩৭ দিন পরে এফআইআর করা হয়েছিল। “যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেখানে ছাড়া অন্য কোনও রাজ্যে এফআইআর করা যায় না। এজাতীয় এফআইআর হলে তা স্থানান্তর করতে হবে।
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলার সিবিআই তদন্তের বিষয়ে বলতে গিয়ে দিবান বলেন তিনি এবিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত চান। তিনি আদালতে সিবিআই তদন্তের বিষয়ে বলেননি। তিনি বিশ্বাস করেন যে সঠিক পদক্ষেপ হল বিষয়টি আগে মুম্বই পুলিশের কাছে স্থানান্তর করতে হবে তারপর সিবিআই-এর প্রসঙ্গ আসবে। শ্যাম দিওয়ান বলেছেন, “বিষয়টি পাটনা থেকে মুম্বাইয়ে স্থানান্তর না করা হলে রিয়া ন্যায়বিচার পাবেন না।”বিহার পুলিশের তদন্ত পরিচালনা প্রশ্নে তিনি বলেন, “তারা যেভাবে বিচার বিভাগের যথাযথ পদ্ধতি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে তা গুরুত্বপূর্ণ৷” এর জবাবে বিহারের তরফে আইনজীবী মণিন্দর সিং বলেন, ” আবেদনকারী তাঁর আবেদনে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। সেক্ষেত্রে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, এখানে বিহার সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। “সুষ্ঠু তদন্ত চালাতেই হবে” বলেও উল্লেখ মণিন্দর সিং।
গত ৮ আগস্ট, মহারাষ্ট্র সরকার একটি হলফনামায় বলেছিল যে সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যুর তদন্তের বিষয়ে সিবিআইয়ের সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করা উচিত ছিল। সেখানে আরও বলা হয় যে সুশান্ত সিং রাজপুতের পরিবার মৃত্যুর পরে সন্দেহজনক কিছু খুঁজে পায়নি এবং সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য বিহার সরকারের আইনত কোনো অধিকার নেই।