নয়াদিল্লি: ভারতীয় রাজনীতিতে সাম্প্রতিক সময়ে যে গরুর তাৎপর্য বিশেষ ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা বলাই বাহুল্য। গরুকে ধর্মীয় প্রেক্ষিতে বসিয়ে তাতে রাজনৈতিক মাত্রা যোগ করার ঘটনা সামনে এসেছে বারবার। এহেন পরিস্থিতিতে এবার গরু সম্পর্কিত এক কেন্দ্রীয় আইনে আপত্তি জানাল শীর্ষ আদালত।
৩ বছর আগে গরুদের উপর অত্যাচার ঠেকাতে কড়া আইন এনেছিল কেন্দ্র সরকার। সেই আইন অনুযায়ী গরুর উপর অত্যাচার বা নির্মমতার অভিযোগ আদালতে প্রমাণ হওয়ার আগেই শুধুমাত্র সন্দেহের বশে অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছ থেকে গরু এবং গোয়াল কেড়ে নিতে পারত সরকার। জানা গেছে, এবার শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট সেই আইন বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র সরকারকে।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের চিফ জাস্টিস শরদ এ. ববদে পরিচালিত একটি ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৭ সালে পাশ হওয়া ওই আইনের বিষয়ে কেন্দ্রকে সতর্ক করেছে। কেন্দ্রের ওই আইনে বলা হয়েছিল, যদি কোনো ব্যক্তি গোহত্যা বা গরুর উপর কোনোরকম অত্যাচারের সঙ্গে যুক্ত আছেন বলে অভিযোগ ওঠে তাহলে সেই ব্যক্তির যাবতীয় গরু বাজেয়াপ্ত করবে সরকার। যতদিন পর্যন্ত না আদালতে ওই ব্যক্তি নির্দোষ প্রমাণিত হচ্ছেন ততদিন সরকারের তত্ত্বাবধানেই ওই গরুদের রাখা হবে।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শরদ এ. ববদে কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘এই পশুগুলি মানুষের জীবিকার উৎস। আপনারা তাদের এভাবে বাজেয়াপ্ত করে রাখতে পারেন না। আপনাদের এই আইন সেকশন ২৯-এর পশু অত্যাচার বিরোধী আইনের সম্পূর্ণ বিপরীত। সেকশন ২৯- এ বলা হয়েছে পশুর বিরুদ্ধে অত্যাচার আদালতে প্রমাণিত হওয়ার পরেই তাঁর পশু বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে।’’ এখানেই শেষ নয়, বিচারপতির কেন্দ্রকে বলেছেন, ‘‘আপনারা হয় এই আইন বাতিল করুন, নয়তো আমরা এতে হস্তক্ষেপ করব।’’
কেন্দ্রের তরফে এ বিষয়ে উত্তরের জন্য কিছু সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৩ মে পশু অত্যাচার তথা হত্যা রোধের উদ্দেশ্যে এই আইন আনা হয়েছিল।