রাজনৈতিক চাপে বাতিল ঋতব্রতর নাটক! ক্ষুব্ধ অভিনেতা

আজ কল্যাণীতে মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল 'দেশের নামে'৷

কল্যাণী: নাট্যাভিনয়ের উপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কায়েমের ঘটনায় কলঙ্কিত হয়েছিল ব্রিটিশ শাসন। নাটকের মাধ্যমে জনমানসে সরকার বিরোধী প্রচারকে বন্ধ করতে ১৮৭৬ সালে কুখ্যাত নাট্য নিয়ন্ত্রণ আইন জারি করেছিল লর্ড নর্থব্রুকের সরকার। কিন্তু স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরেও খুব কি বদলাতে পেরেছে সেই ছবিটা? খাস কলকাতা থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটারের ব্যবধানে ঘটে যাওয়া এক ঘটনায় আরো একবার উঠে গেছে সেই প্রশ্নই।

বড় পর্দার দৌলতে টলিউড জগতে ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়র নাম সুপরিচিত। কিন্তু নাটক থিয়েটারের দুনিয়াতেও লেগে থাকে তাঁর নিত্য আনাগোনা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উন্মাদনায় যখন কার্যত ফুটছে বাংলা, তখন একটি রাজনৈতিক নাটক মঞ্চস্থ করার ফল ভুগতে হল প্রখ্যাত অভিনেতা শান্তিলাল মুখার্জীর ছেলে ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। তাঁর পরিচালিত নাটক ‘দেশের নামে’-র শো বন্ধ করে দেওয়া হল কল্যাণীতে। ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ঋতব্রত জানিয়েছেন, “আমাদের ফোন করে জানানো হয়েছে শো-টা হবে না। এমন ক্ষমতা কাদের থাকে বুঝতেই পারছেন। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ জায়গা থেকে নাটকটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

জানা গেছে, আজ ৫ মার্চ কল্যাণীর তাপস সেন কুমার রায় ভবনে ‘ইউনিভার্সিটি ফ্রেন্ডস গ্রুপ’ প্রযোজিত আলোচ্য নাটকটি মঞ্চস্থ করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে বৃহস্পতিবার হঠাৎই ফোন করে শো বন্ধ করার কথা বলা হয়। “আগাগোড়া রাজনৈতিক” এই নাটকের পোস্টারে লেখা কিছু লাইনেই হয়তো কারোর কারোর ঘোর আপত্তি রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ঋতব্রত। তাঁর কথায়, “পোস্টারের কিছু লাইনই হয়তো অনেককে ভয় পাইয়ে দিয়েছে। ফলে আমারা যা বলতে চেয়েছিলাম, তা যে বলতে পেরেছি সেটা শো বন্ধ করা থেকেই বোঝা যাচ্ছে।” কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশে শিল্পচর্চায় এই রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কতটা কাম্য? উঠছে প্রশ্ন। 

উল্লেখ্য, একুশের নির্বাচনের আগে বঙ্গ রাজনীতির রঙ্গ মঞ্চে দর্শকদের জন্য চমকের অভাব নেই। বিশেষত এবারের ভোটের আগে রাজনীতির সঙ্গে টলিউডের যোগ আলাদা করে নজর কেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো টলিউড তারকাকে দেখা যাচ্ছে রাজনীতির ছত্রতলে। এমতাবস্থায় নাটক অভিনয়ের উপর এহেন ক্ষমতার দাপট নিঃসন্দেহে উদ্বেগ বাড়াবে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *