রাশিয়ার এই ভয়ঙ্কর বোমারুর হামলায় ধ্বংসস্তূপ কিয়েভ! কিনতে মরিয়া ভারতও

রাশিয়ার এই ভয়ঙ্কর বোমারুর হামলায় ধ্বংসস্তূপ কিয়েভ! কিনতে মরিয়া ভারতও

c7e0ebea9b00bf3b5ec60043c2026302

কলকাতা:  গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের আকাশে অনবরত চক্কর কাটছে ‘হোয়াইট সোয়ান’  বা সাদা রাজহাঁস৷ বিশ্বদরবারে তাকে নিয়ে চর্চাও বিস্তর৷ তবে এটা সত্যিকারের কোনও হাঁস নয়, বরং রাশিয়ার হাতে থাকা এক মোক্ষম অস্ত্র৷ যার পোশাকি নাম টুপোলেভ টিইউ-১৬০এম। এটি একটি সুপারসনিক বোমারু বিমান।

আরও পড়ুন- ডনেৎস্কে প্রত্যাঘাত, ইউক্রেন সেনার গোলায় বর্ষণে গুরুতর জখম রাশিয়ার প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী!

সোমবার পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই ‘স্ট্র্যাটেজিক বম্বার’-এর সফল উড়ানের কথা ঘোষণা করেছে মস্কো৷ বলা হয়েছে, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে সফল ভাবে আকাশে ডানা মেলছে টিইউ-১৬০এম। এই রাজহাঁসের শক্তি দেখেই রুশ প্রতিরক্ষা দফতর আরও ২৫ জোড়া বিমানের বরাত দিয়েছে নির্মাতা সংস্থা ‘ইউনাইটেড এয়ারক্র্যাফ্‌ট কর্পোরেশন’-কে। কিয়েভকে পাখির চোখ করেই রাশিয়ার এই তৎপরতা বলে মনে করা হচ্ছে।

টিইউ-১৬০এম আসার আগে সোভিয়েত রাশিয়ার হাতে ছিল এটির পূর্ববর্তী সংস্করণ টিইউ-১৬০৷ এই সিরিজের মোট ৩৯টি বোমারু বিমান বানিয়েছিল ‘কাজান এয়ারক্র্যাফ্‌ট প্রোডাকশন অ্যাসোসিয়েশন’। সত্তরের দশকে আমেরিকার তৈরি ‘রকওয়েল বি-১ ল্যান্সার’ বোমারু বিমানের নকশার অনুকরণেই টিইউ-১৬০ বানিয়েছিল মস্কো। এর পর আশির দশকের শেষ লগ্নে সোভিয়েত বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয় টিইউ-১৬০৷ যা পশ্চিমি দুনিয়ায় ‘ব্ল্যাকজ্যাক’ নামে পরিচিতি পায়। এটিই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং দ্রুতগামী সুপারসনিক বোমারু বিমান৷ 

১৯৮১ সালে টিইউ-১৬০-এর প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ান হয়। এবং ছয় বছর পর  ১৯৮৭ সালে সোভিয়েত বায়ুসেনার অংশ হয় এই বোমারু বিমান৷ এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, এটি প্রতিকূল আবহাওয়া এবং যে কোনও ভৌগোলিক অবস্থানের মধ্যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নির্ভুল নিশানা করতে পারদর্শী৷ 

পঞ্চাশের দশকে রুশ বায়ুসেনার হাতে ছিল ভারী বোমারু বিমান টুপোলেভ টিইউ-৯৫এম৷ সেই বোমারুর কিছু আধুনিকীকরণ করে তৈরি করা হয় টিইউ-১৬০ বোমারু বিমান। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২০০ কিলোমিটার বেগে ডানা মেলে উড়ে সাড়ে ৭ হাজার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘কার্পেট বম্বিং’ করতে পারে রাশিয়ার এই বম্বার। যাঁর নিশানায় ধ্বংস হতে পারে আস্ত একটা শহর। 

২৭৫ টন অ-পরমাণু বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে টানা ১২,৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে টিইউ-১৬০। তবে এ ধরনের ভারী বোমারু বিমান ব্যবহারে কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন- ভারী ওজন এবং তুলনামূলক কম গতি হওয়ায় যে কোনও সময় তা শত্রুপক্ষের আধুনিক যুদ্ধবিমানের ‘সহজ শিকার’ হতে পারে৷ ফলে টিইউ-১৬০ শত্রু পক্ষের আকাশসীমায় ঢুকে বোমাবর্ষণের করে, তখন তার নিরাপত্তার পাঠাতে হয় অন্য এক যুদ্ধবিমান।

বর্তমানে ভারত-সহ একাধিক দেশের বিমানবাহিনী ফাইটার বা বম্বারের বদলে মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্‌ট ব্যবহার করে থাকে। যেমন ভারতের রাফাল৷  তবে সম্প্রতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে বায়ুসেনার জন্য বোমারু বিমান কেনার তোড়জোড় শুরু করেছে নয়াদিল্লি। আর সেক্ষেত্রে পছন্দের শীর্ষে রয়েছে টিইউ-১৬০। এই বিমানের মূল অস্ত্র ২,০০০ কিলোমিটার পাল্লার কেএইচ-৪৭এম২ কিঞ্ঝল পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র।তবে এখনও কোনও দেশকে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই বোমারু বিমান বিক্রির প্রস্তাব দেয়নি মস্কো।