নয়াদিল্লি: নিরপেক্ষতার সঙ্গে অতীতকে তুলে ধরাই ইতিহাসের কাজ। তবে দেশে দেশে দিনে দিনে বহু ঐতিহাসিকের নামেই লেগেছে পক্ষপাতিত্বের কালি। কোনো নির্দিষ্ট পূর্ব ধারণা থেকেই ইতিহাস লিখতে শুরু করেছেন তাঁরা, যার ফলে নিখাদ সত্যের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই মিশেছে ভেজাল। ভারতের ইতিহাস রচয়িতাদের উপর এবার এমনই পক্ষপাতিত্বের গুরুতর অভিযোগ আনল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS)।
এযাবৎ ঐতিহাসিকেরা সংকীর্ণ ভাবেই ভারতের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন, এমনটাই দাবি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভগবতের। ভারতের ইতিহাস রচনা পদ্ধতির উপর তাই এবার একটি বিতর্কের সূচনা করতে চায় সংঘ। শুধু তাই নয়, জানা গেছে এ ব্যাপারে সংঘের তরফে একটি বইও প্রকাশ করা হচ্ছে যা ভারতের লিখিত ইতিহাস সংকীর্ণ তথা পক্ষপাতদুষ্ট কিনা তা আলোচনা করবে। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি এই বই প্রকাশের দিন ধার্য করা হয়েছে।
আলোচ্য বইটির নাম ‘ঐতিহাসিক কালগণা: এক ভারতীয় বিবেচন’ (‘Aitihasik Kaalgana: Ek Bhartiya Vivechan’)। সমাজবিদ্যা কেন্দ্রের ডিরেক্টর রবি শঙ্কর এই বইয়ের রচয়িতা। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবৎ এই বইটি প্রকাশ করবেন। এযাবৎ ভারতের যে ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন বিভিন্ন ঐতিহাসিক, তাঁরা ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যকে অবহেলা করেছেন বলেই দাবি সংঘ প্রধানের। এ প্রসঙ্গে বইয়ের রচয়িতা বলেন, “ইতিহাস লেখার সময় ঐতিহাসিকরা ভারতের প্রাচীন উৎসগুলিকে অবহেলা করেছেন। এদেশের লক্ষ লক্ষ বছরের পুরোনো ইতিহাস যে সমস্ত বইতে লেখা রয়েছে তার বেশিরভাগই সংস্কৃতে রচিত। আর যাঁরা ইতিহাস লিখেছেন তাঁদের অধিকাংশই সংস্কৃত ভাষা জানেন না।” সিন্ধু সভ্যতার কথা ইতিহাসে লেখা হলেও মহাভারত সম্বন্ধে ইতিহাসে গুরুত্ব আরোপ করা হয়নি, অভিযোগ রবি শঙ্করের। এছাড়া শুধু লেখাই নয়, এদেশে ইতিহাস পড়ানোর ধরণটি নিয়েও আপত্তি করেছে সংঘ। লেখক জানিয়েছেন, ইউরোপীয়ানরা ইতিহাসের প্রতি নিতান্তই অবজ্ঞা প্রকাশ করে থাকেন, আর সেই অবজ্ঞার প্রভাবই পড়েছে ভারতীয় ঐতিহাসিকদের উপরেও।