বেঙ্গালুরু: গত বুধবার, ২৩ অগাস্ট চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’৷ এর কয়েক ঘণ্টা পর বিক্রমের পেটের দরজা খুলে বেরিয়ে আসে রোভার ‘প্রজ্ঞান’৷ গত এক সপ্তাহ ধরে চাঁদের মাটিতে গুটি গুটি পায়ে ঘুরতে ঘুরতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে রোভার৷ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ছবি পাঠিয়েছে সে৷ জানিয়েছে চাঁদেক তাপমাত্রা৷ এবার জানাল, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে রয়েছে সালফার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টুইট করে এই খবর জানিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। শুধুই কী সালফার? ইসরো জানিয়েছে, সালফারের পাশাপাশি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রয়েছে অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালশিয়াম, লোহা, ক্রোমিয়াম, টাইটেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন৷ মিলেছে অক্সিজেনের অস্তিত্বও৷ চাঁদে হাইড্রোজেন আছে কিনা, চলছে সেই খোঁজ৷
গত ২৪ অগাস্ট ভোরে ল্যান্ডার বিক্রমের পেট থেকে বেরিয়ে আসে রোভার প্রজ্ঞান। তার পর থেকেই শুরু হয় তার হাঁটাহাটি৷ ছটি চাকার উপর ভর করে চাঁদের জমিতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে সে। ইসরোর তরফে এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালশিয়াম, লোহা, ক্রোমিয়াম, টাইটেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন, অক্সিজেন যে খুঁজে পাওয়া যাবে, সে সম্পর্কে তারা প্রায় নিশ্চিত ছিলেন। এখন হাইড্রোজেনের খোঁজ চলছে। প্রজ্ঞানে রয়েছে লেজার-ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেক্ট্রোস্কোপ (এলআইবিএস)। যা চাঁদের মাটি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা লেজার প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখে। এই প্রযুক্তি গড়ে উঠেছে বেঙ্গালুরুতে ইসরোর ইলেক্ট্রো-অপটিকস সিস্টেমের গবেষণাগারে৷ এলআইবিএসের মাধ্যমেই চাঁদের মাটি ঘেঁটে সালফার-সহ একাধিক খনিজের হদিস পেয়েছে প্রজ্ঞান।
এতদিন চাঁদের দক্ষিণ মেরু ছিল অনাবিষ্কৃত৷ ফলে চাঁদের এই অংশ ছিল বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা। দক্ষিণ মেরু জয়ের পর প্রজ্ঞান যে তথ্য পাঠাচ্ছে, তা গবেষণার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত ২৩ অগাস্ট, বুধবার সন্ধ্যা ঠিক ৬টা বেজে ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিল তৃতীয় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার৷ পাখির পালকের মতো ভাসতে ভাসতে চাঁদের পিঠে অবতরণ (সফ্ট ল্যান্ডিং) করেছিল বিক্রম৷ অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পরে বিক্রমের পেট থেকে বেরিয়ে আসে প্রজ্ঞান। খুবই ধীর গতিতে কাজ করছে সে৷ এত গতিবেগ সেকেন্ডে এক সেন্টিমিটার মাত্র।