কলকাতা: তিনি লাস্যময়ী৷ তাঁর রূপের আগুনে পুড়ে ছারখাড় হয় পুরুষ হৃদয়৷ আবার তাঁর চোখের ইশারায় বশ মানে বন্যপ্রাণীও৷ না তিনি রূপকথার কোনও মায়াবী কন্যে নয়, তিনি এক ডাকাবুক সুন্দরী৷ ওই যে, কথায় বলে না, ‘যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে’৷
আরও পড়ুন- ওয়েব সিরিজ দেখার ‘অপরাধ’, কিমের নির্দেশে ২ কিশোরকে প্রকাশ্যে গুলি
কথা হচ্ছে ভূবিজ্ঞানী, মডেল এবং বন্যপ্রাণ বিশ্লেষক রোজি মুরের। ফ্লোরিডার বাসিন্দা রোজি একটি পাবলিক সেক্টরে জলসম্পদ ব্যবস্থাপক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন৷ তাঁর গবেষণার বিষয়বস্ত বন্যপ্রাণ৷ বিশেষ ভাবে তাঁকে কাজ করতে হয় সরীসৃপ এবং জলজ প্রাণীদের নিয়ে৷ তাতে কী? সকলে যখন বিশাল বিশাল অজগর কিংবা হিংস্র কুমির দেখে আতকে ওঠেন, তখন খালি হাতেই তাদের ধরেন রোজি৷ কুমির ধরার জন্য কোনও বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজনও হয় না তাঁর। কুমিরও যেন বশ মানে তাঁর বাঁকা চাউনিতে৷
এ ছাড়াও আরও কিছু গুণ রয়েছে রোজির৷ তিনি শার্ক ডাইভিংও করেন। কাজের সূত্রেই গভীর সমুদ্রের অন্দরমহলে তাঁর আনাগোনা৷ সমুদ্রের হাঙর ভর্তি এলাকায় তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন চোখের নিমেষে৷ কখনও আবার বন্য সরীসৃপের খোঁজে পাড়ি দেন গভীর জঙ্গলের অন্দরে। জলকাদা গায়ে মেখে ধরে আনেন আস্ত কুমির! খালি হাতে কুমির ধরেই অনায়াসে তার মুখ বেঁধে ফেলেন রোজি৷
জলে-জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়ানো এই লাস্যময়ীর আরও একটি রূপ রয়েছে। সাপ আর কুমির ধরার পাশাপাশি রোজি চুটিয়ে মডেলিংও করেন৷ নানাবিধ নকশা করা পোশাক পরে, ঝড় তোলেন ব়্যাম্পে৷
রোজি জানিয়েছেন, শার্ক ডাইভিং বা কুমির ধরার সময় ছবি তুলতে তুলতেই মডেলিংয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় তাঁর। সেই সূত্রেই পরিচয় হয় চিত্রগ্রাহকের সঙ্গেও৷ ব়্যাম্পে পা রাখার পর ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এই তরুণ বিজ্ঞানী। বর্তমানে আমেরিকার একাধিক পোশাক এবং পানীয় তৈরির সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রোজি। তাঁর প্রতিটি কাজেই পেশাদারিত্বের ছাপ স্পষ্ট।
ফ্লোরিডার বাসিন্দা হলেও রোজি আসলে মিসৌরির মানুষ। তাঁর যখন ২০ বছর বয়স, তখন তিনি ফ্লোরিডায় চলে আসেন। ছোটবেলা থেকেই রোজি অকুতভয়৷ বন্যপ্রাণের প্রতি তাঁর টান বরাবরের৷ হাঙর তাঁর বড়ই প্রিয়। ফ্লোরিডায় আসার পর সেখানে ফ্লোরিডা আটলান্টিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন করেন এই রূপসী। এর পর পড়েন ভূবিজ্ঞান। এই সূত্রেই জলসম্পদ, জলজ প্রাণীদের নিয়ে নানা কাজ শুরু। ধীরে ধীরে সরীসৃপদের সঙ্গে গড়ে ওঠে সখ্য৷ তাঁকে দেখে ফনা তুলতে পারে না বিষধর সাপও৷
রোজির কথায়, ‘‘জীবনের অনিশ্চয়তাই তাঁর সবচেয়ে বেশি প্রিয়।’’ এমন জীবনই তিনি চেয়েছিলেন৷ যেখানে সকালবেলা উঠে সারা দিনের কাজ আগে থেকে ঠিক করে নেওয়া যাবে না। জীবনের প্রতি মুহূর্তে থাকবে চমক, তেমনই অনিশ্চয়তায় মোড়া এক জীবন চেয়েছিলেন এই লাস্যময়ী৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>