নিজস্ব প্রতিনিধি: মাত্র কিছুদিন হল বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঠাঁই হয়েছে তিহাড় জেলে। কিন্তু এই ক’দিনেই সেখানে আর মন টিকছে না কেষ্টর। তাই ফের আসানসোল সংশোধনাগারে ফেরার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হলেন অনুব্রত। এই মর্মে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন অনুব্রতর আইনজীবী। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হতে পারে। কি যুক্তি খাড়া করেছেন তিনি? অনুব্রতর আইনজীবী এ ব্যাপারে সাত পাতার একটি আবেদন জমা করেছেন আদালতে। তাতে বলা হয়েছে, অনুব্রতর বিরুদ্ধে মূল মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতায়। তাঁকে প্রথমে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে ইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দিল্লিতে নিয়ে এসেছে। ইতিমধ্যেই সেই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষ হয়েছে। তাঁকে দিল্লিতে রাখার আর প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই আসানসোল সংশোধনাগারেই ফেরানো হোক অনুব্রতকে। সেই সঙ্গে আরও বলা হয়েছে প্রয়োজন মনে করলে আসানসোল সংশোধনাগারে গিয়ে অনুব্রতের বয়ান রেকর্ড করতে পারবেন ইডি আধিকারিকরা।
আসানসোল থেকে অনুব্রতর দিল্লি যাওয়া নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে টালবাহানা চলে। অবশেষে গত ৮ মার্চ অনুব্রতকে দিল্লির সদর দফতরে নিয়ে যায় ইডি। গরু পাচার মামলায় তৃণমূল নেতার কাছ থেকে আরও তথ্য জানার জন্য তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয় আদালতে। তখন থেকে দিল্লির তিহাড় জেলেই রয়েছেন অনুব্রত। ৩ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তার আগেই তিহাড় থেকে আসানসোল সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানালেন অনুব্রতর আইনজীবী। বিরোধীদের অভিযোগ আসানসোল জেলে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেতেন অনুব্রত, তা তিহাড় জেলে মিলছে না বলেই এই আবেদন করেছেন তিনি। বিরোধীদের এই অভিযোগের অনেকটাই সত্যতা আছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করে।
তবে কী সেই কারণেই গরু পাচার মামলায় আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগারের সুপারিনটেনডেন্ট কৃপাময় নন্দীকেও তলব করেছে ইডি? ৫ এপ্রিল তাঁকে দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। বিরোধীদের দাবি আসানসোল সংশোধনাগারে অনুব্রত মণ্ডল রীতিমতো ‘জামাই আদরে’ থাকতেন। সেখানে নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা তাঁকে দেওয়া হতো বলে অভিযোগ। অর্থাৎ আসানসোল সংশোধনাগারকে নিজের ‘হোম গ্রাউন্ড’ হিসেবেই দেখেন অনুব্রত। তাই সেখানে থেকেই ইডি আধিকারিকদের সামলাতে চান বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে চেনা মাঠে ‘খেলা’ অনেক সহজ। তাই অচেনা মাঠে ‘খেলতে’ চাইছেন না অনুব্রত। তাই দিল্লি থেকে আসানসোলে ফেরার যে আবেদন করেছেন তিনি তা আদালত মঞ্জুর করে কিনা তার উপরই কেষ্টর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে রয়েছে।