কলকাতা: করোনা সতর্কতায় তড়িঘড়ি কোয়ারেন্টাইনের ঘোষণা করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের নামই শোনা গিয়েছিল রাজ্যের প্রথম কোয়ারেন্টাইন হিসেবে। সূত্রের খবর, ২০০টি শয্যার বন্দোবস্ত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষে। কিন্তু বাস্তবে কী অবস্থা তার? করোনা আক্রান্তরা কতটা নিরাপদ সেখানে, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
সন্দেহভাজন এক আক্রান্তের কথায়, 'কোনও চিকিৎসক নেই এখানে। আমি তিন চার ঘণ্টা ধরে আমি আছি এখানে। একজন জুনিয়র ডাক্তার ছিলেন। তিনি ব্লাড প্রেশার পরীক্ষা ছাড়া আর কিছুই করেননি।' এমনকী, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকলে সরকারের তরফে কেন এখানে আনা হয়েছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের ভেতরে পরিকাঠামোর এমন অভাব, মেঝে ও চেয়ারে এত নোংরা যে সেখানে করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা তো দূরের কথা, এমনিতেই মানুষ মারা যাবে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের মধ্যে নেই খাবারের বন্দোবস্তও। অটোয় করে বাইরে থেকে আনা হচ্ছে খাবার। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সন্দেহভাজন আক্রান্তদের পরিজনরা। তাঁদের কথায়, 'বাইরে থেকে আমাদের চোখের সামনে এইমাত্র খাবার নিয়ে যাওয়া হল। অন্য কারও জন্য নয়। রোগীদের জন্য।' কয়েক ঘণ্টা ধরে কেউ জল পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগের তির হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকে। সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্তের একজন বলেন, 'জল নেই। স্যানিটাইজার নেই। চেয়ারে, মেঝেতে ধুলো, ময়লা। এভাবেই পড়ে আছে। এক গ্লাস পানীয় জলও পাইনি।'
বিভিন্ন স্থান থেকে ফেরা যাত্রীদের বিমানবন্দরে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার পর প্রাথমিকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপরে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে বলেও জানানো হয় ফোন কলে। এই নির্দেশ অমান্য করলে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার কথাও বলা হয়। পরে জানানো হয়, তাঁদের যেতে হবে রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে। নির্দেশ অনুসারে যাত্রীরা সেখানে পৌঁছলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সক্রিয়তাই দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষারও ব্যবস্থা ছিল না বলেই জানান তাঁরা।