বাচ্চাদের নামকরণ করাই কাজ, উপার্জন আকাশ ছোয়া! অদ্ভুত পেশার আয় জানেন কত?

বাচ্চাদের নামকরণ করাই কাজ, উপার্জন আকাশ ছোয়া! অদ্ভুত পেশার আয় জানেন কত?

কলকাতা: ছোট থেকে কেউ ডাক্তার, কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার, কিংবা পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখেন৷ কেউ আবার হতে চান আইপিএস বা আইএস৷ কারও ভালোলাগে শিক্ষকতা৷ কিন্তু এর বাইরেও অসংখ্য পেশ রয়েছে৷ তবে এমন পেশাও যে রয়েছে, তা শুনে অবাক হতে হয় বৈকি!

আরও পড়ুন- চিনেও বলিউড ম্যাজিক, মিঠুনের ‘জিমি জিমি’র সুরে এখন প্রতিবাদী চিনারা

কী এই পেশা? এই পেশায় ঠিক করা হয় সদ্যোজাতদের নাম৷ যে সকল বাবা-মা বিস্তর চিন্তাভাবনার পরেও বাচ্চার নাম কী রাখবেন, তা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না, তাঁরা হাজির হন নামকরণ শিল্পীদের কাছে৷ তারপর তাঁদের মদতে ঠিক করে নেন ছেলে মেয়ের নাম৷ তবে এর জন্য বেশ ভালই খসাতে হয় গাঁটের কড়ি৷  

এই পেশার সঙ্গে যুক্ত এক শিল্পীর নাম টেলর এ হামফ্রে। নামকরণ শিল্প থেকে বর্তমানে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছেন তিনি। বছর ৩৩-এর টেলর একজন পেশাদার নামকরণিক। তিনি নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা৷ সদ্যোজাতদের জন্য নিখুঁত এবং মানানসই নাম ঠিক করে দেওয়াই তাঁর নেশা ও পেশা। কিন্তু জানেন কি বাবা-মায়েদের মুশকিল আসান করতে কত টাকা নেন তিনি? সদ্যোজাতের নামকরণ করতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা করে নেন টেলর। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো আবার সাত-আট লক্ষ টাকা পারিশ্রমিকও নিয়ে থাকেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্কারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টেলর বলেন, ‘‘বাচ্চাদের জন্য যে জনপ্রিয় নামগুলি রয়েছে, সেগুলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে এই সব নামের অর্থে আমাদের সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ অন্তর্নিহিত রয়েছে।’ ২০২২ সালে এখনও পর্যন্ত তিনি একশোরও বেশি বাচ্চার নামকরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন টেলর।

দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে কী কী পরিষেবা দিয়ে থাকেন টেলর?  টেলর জানান, ওই টাকার বিনিময়ে বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের নাম নিয়ে তাঁর সঙ্গে ফোনে আলোচনা করতে পারেন। পাশাপাশি, তিনি নিজেও নামের একটি তালিকা অভিভাবকদের কাছে পাঠান। যেখান থেকে বাবা-মায়েরা তাঁদের পছন্দ মতো নাম সন্তানের জন্য বেছে নিতে পারেন। 

কী ভাবে নামের তালিকা তৈরি করেন? টেলর জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট পরিবারের পূর্বপুরুষদের নাম বিশ্লেষণ করার পরই এই তলিকা তৈরি করা হয়ে থাকে৷ যে সকল ক্লায়েন্টের কাছ থেকে আট লক্ষ টাকা নেন, তাঁদের এই সব পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি বাবা-মায়ের ব্যবসা এবং পেশার সঙ্গে মিলিয়েও সন্তানের নামের তালিকা তৈরি করে দেন টেলর। 

২০১৫ সাল থেকে এই পথে পথ চলা শুরু তাঁর৷ সেই সময় নিজে একটি নামের তালিকা তৈরি করে সমাজমাধ্যমে ব্যবসা শুরু করেন। টেলর বলেন, ‘‘প্রথমে ইনস্টাগ্রামে আমার ফলোয়ারের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা৷ এর পর বাচ্চাদের জন্য অভিনব নাম ঠিক করে তা পোস্ট করা শুরু করি৷ আমার ফলোয়ারের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। অনেকেই বাচ্চাদের নামকরণের জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’’

টেলর জানান, ২০১৮ সালে তিনি বুঝতে পারেন শিশুর নামকরণের কাজে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে তাঁর। এর পরই ব্যবসা নিয়ে বেশ সচেতন হয়ে ওঠেন। ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনাও করতে থাকেন৷ তবে টেলর জানিয়েছেন,  সদ্যোজাতদের নামকরণ করতে গিয়ে অনেক সময় বেশ ঝক্কিও পোহাতে হয় তাঁকে। কিছু কিছু বাচ্চার অভিভাবকদের কোনও নামই পছন্দ হয় না৷ তাঁদের জন্য অনেক বেশি খাটতে হয়৷ তবে পরিশ্রমিকে কোনও খামতি থাকে না। কয়েক বছরের মধ্যেই কয়েক কোটি টাকার মালিক টেলর৷