অনলাইনের রমরমা, কোপ প্রাইভেট টিউশনে! বিপন্ন গৃহশিক্ষকদের রুটিরুজি

অনলাইনের রমরমা, কোপ প্রাইভেট টিউশনে! বিপন্ন গৃহশিক্ষকদের রুটিরুজি

কলকাতা: গত বছরের শুরু থেকে যে করোনা ভাইরাস সারা পৃথিবী জুড়ে ঘাঁটি গেড়েছে, তার জেরে মারা গেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। শুধু তাই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেই এলোমেলো করে দিয়েছে এই মারণ ভাইরাস। অন্যান্য অনেকের মতোই করোনার জেরে বেজায় বিপাকে পড়েছেন গৃহশিক্ষকরা।

করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের পর থেকে সেই যে বন্ধ হয়েছিল স্কুল কলেজ, এখনও তা খোলেনি। স্কুলের পঠনপাঠন অনলাইন মাধ্যমে চলছে ঠিকই, কিন্তু কোপ পড়েছে গৃহশিক্ষকদের উপর। অতিমারী পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের জন্য আলাদা করে গৃহশিক্ষার প্রয়োজন আছে বলে মনেই করছেন না অভিভাবকদের একাংশ। ফলে ‘নিউ নর্মালে’ গৃহশিক্ষকদের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে অনেকটাই।

শুধু তাই নয়, এ ব্যাপারে গৃহশিক্ষকদের একটা বড় অংশ দুষছেন স্কুল শিক্ষকদের। করোনা আবহে গৃহশিক্ষা বা প্রাইভেট টিউশন হয়ে গেছে অনলাইন নির্ভর। কিন্তু অনলাইনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্কুল শিক্ষকদের টিউশনের রমরমা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। ফলে যাঁরা শুধু মাত্র প্রাইভেট টিউশন করেই জীবিকা নির্বাহ করেন, তাঁদের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন অনেকেই।

খাতায় কলমে স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন পড়ানোর নিয়ম না থাকলেও বাস্তবে দেখা যায় অন্য ছবি। বাড়তি রোজগারের জন্য অনেকেই স্কুলের চাকরির পরে বাড়িতেও ডেকে নিয়ে পড়ান ছাত্রছাত্রীদের। স্কুল শিক্ষকদের সঙ্গে এই অসম প্রতিযোগিতায় বরাবরই ব্যাকফুটে থাকেন সাধারণ গৃহশিক্ষকরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত শিক্ষক মহলের একাংশের।

এ প্রসঙ্গে গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির রাজ্য সম্পাদক পার্থপ্রতিম চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘করোনাকালে শিক্ষকদের স্কুল যেতে হচ্ছে না, পড়ুয়াদেরও বাড়িতে ডাকতে হচ্ছে না। অনলাইনে তাঁরা একসঙ্গে অনেককে পড়াতে পারছেন।’’ স্কুল শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশন করছেন কি না সে বিষয়ে কড়া নজরদারির দাবি জানিয়েছেন তিনি। বস্তুত করোনা আবহে স্কুল কলেজের পঠনপাঠন চললেও সকলকেই পাশ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এর প্রভাব ছাত্রছাত্রীদের উপর মারাত্মক। পাশ যখন করেই যাব, তখন আর প্রাইভেট টিউশন নিয়ে পড়াশোনা করার কী দরকার? এমনটাই মনে করছে অধিকাংশ পড়ুয়া, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের অভিভাবকরাও। সব মিলিয়ে চলতি ব্যবস্থার উপর বেজায় বিরক্ত গৃহশিক্ষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *