কলকাতা: একটা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ৷ রিড করতেই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে জীবন৷ কী এমন লেখা ছিল ওই মেসেজে? বিষয়টা খুলে বলা যাক৷ একটা অচেনা নম্বর থেকে মেসেজ এসেছিল শিক্ষক তিলক রাজ ঘোষের মোবাইলে৷ তাতে লেখা ছিল, তিনি লোন নিয়েছেন৷ শীঘ্র সেই লোন পরিশোধ করে দিতে হবে৷ ওই মেসেজ দেখার পর ইগনোর করে গিয়েছিলেন ওই শিক্ষক৷ কিন্তু এর পর থেকে বিভিন্ন রকম মেসেজ আসতে থাকে৷ যার সারমর্ম একটাই, তিনি লোন নিয়েছেন৷ দ্রুত তা পরিশোধ করতে হবে৷
কোনও রকম রিপ্লাই না করায় আসতে থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কল৷ রীতিমতো ভয় দেখানো হয় তিলকবাবুকে৷ এমনকী তাঁকে বলা হয়, ব্যাঙ্কের ডিটেলস আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, সবই তাঁদের কাছে আছে৷ এ পরেই ভয়ে টাকা দিতে শুরু করেন ওই শিক্ষক৷ এক মাসের মধ্যে ৬০ হাজার টাকাও দিয়ে দেন তিনি৷ তিলকবাবু জানান, যে সকল নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন আসছিল, তাতে হয় কোনও পুলিশ অফিসার, নয়তো সেন্ট্রাল ডিটেকটিভ অফিসের ছবি৷ যা দেখে কিছুটা ঘাবড়েও যান তিনি৷ এর পর টাকা দেওয়া বন্ধ হতেই শুরু হয় ব্ল্যাকমেলিং৷
তিলকবাবু জানান, তাঁর অফিস কলিগ, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব সকলকে ফোন করে বলা হয়েছে, তিনি লোন নিয়েছেন এবং সেই লোনের গ্যারান্টার তাঁরা৷ তাঁদের বলা হচ্ছে, তিলকবাবু লোনের টাকা শোধ দিচ্ছেন না৷ এদিকে, ক্রমাগত হুমকি ফোনে দেওয়ালে পিঠ ঠেকতেই ভাটপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই শিক্ষক৷ এই ঘটনায় পুরো পরিবার আতঙ্কে রয়েছে৷ তবে কারা এই ফোন করছে, বা কারা টাকা নিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সেই কিনারা করতে পারেনি পুলিশ৷
শিক্ষক জানান, ব্ল্যাকমেল করে তাঁর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু ওই প্রতারকদের ফোনে কী ভাবে পুলিশের ছবি এল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ফোনে আসা লিঙ্ক ক্লিক করলেই একটা এপিকে ফাইল কিংবা একটা অ্যাপ ইনস্টল হয়ে যাচ্ছে। ওই অ্যাপ ইনস্টল হলেই আমাদের সমস্ত তথ্য প্রতারকদের কাছে চলে যাচ্ছে। তখন আমাদের নাম ভাঙিয়া লোন নিয়ে নিচ্ছে তারা। কে কী ভাবে লোন নিয়ে নিচ্ছে কিছুই জানতে পারছে না প্রতারিত ব্যক্তি৷’’