নয়াদিল্লি: করোনার টিকা নিয়ে ঘোড়াদৌড় চলছে বিশ্বজুড়ে। এই মারণ ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে তৎপর প্রতিটি দেশ। তবে এই দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের তৈরি ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই সাফল্যের পথে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। শোনা যাচ্ছে সব ঠিক থাকলে এ বছরের শেষের দিকেই বাজারে আসবে ভ্যাকসিন। কিন্তু তার দাম কত হবে? সাধারণ মানুষ কি কিনতে পারবে সেই প্রতিষেধক? সম্প্রতি এই প্রশ্নেরই উত্তর দিল সিরাম ইনস্টিটিউড।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য জৈব-ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাথে অংশীদারিত্বে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদার পুনাওয়াল্লা বলেছিলেন, ব্রিটেন এবং ভারত, উভয় ক্ষেত্রেই ট্রায়াল সফল হলে ভ্যাকসিনটি চালু হবে। সোমবার দ্য ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল ও মে মাসে ব্রিটেনের ৫টি হাসপাতালে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সি এক হাজারেরও বেশি মানুষকে এই ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া হয়েছিল। এর কোনও গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এর দুটি ডোজ মানুষের দেহে যেমন করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তেমনই রোগ প্রতিরোধের জন্য টি-সেলও তৈরি করে।
পুনওয়ালা জানিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার পরীক্ষামূলক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করবে সিরাম ইনস্টিটিউট। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, “আমরা আগস্টে ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়াব। এই বছরের শেষ নাগাদ, ডিসেম্বরের শেষের দিকে ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করতে সক্ষম সিরাম ইনস্টিটিউট।।” সংস্থাটি বিশেষ অনুমতি নিয়ে অক্টোবরের মধ্যে প্রতি মাসে ভ্যাকসিনের ৭০ মিলিয়ন ডোজ তৈরি করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতি মাসে ১০০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের পরে যাতে এটি বাজারে ছাড়া যেতে পারে, তাই এমন পরিকল্পনা।
এই ভ্যাকসিনের দাম নিয়েও আশার কথা শুনিয়েছেন পুনাওয়ালা। বলেছেন, “আমরা একে খুব সাশ্রয়ী মূল্যে এটি বাজারে ছাড়তে চেষ্টা করছি। প্রতিটি ভ্যাকসিন এক হাজার টাকা বা তার চেয়ে কম দামে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। আমি মনে করি না ভারত বা অন্য কোনও দেশের নাগরিককে এর জন্য মূল্য দিতে হবে। কারণ আমার মনে হয় এটি সরকার কিনে নেবে এবং বিনামূল্যে বিতরণ করবে।” তিনি আরও বলেছেন, ন্যূনতম লাভ রেখে এই ভ্যাকসিনটি তাঁরা বাজারে ছাড়তে চান। আমরা সাধারণত কোনও লাভ করতে চাই না, আসলে, কোভিড সংকটে এবং মহামারীটি শেষ হওয়ার পরে, আমরা বাজারে উপলভ্য হতে পারে এমন আরও বাণিজ্যিক দামের দিকে নজর দিতে পারি,” তিনি বলেছিলেন। শোনা যাচ্ছে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের ৫০ শতাংশ ভারতের জন্য রেখে বাকি ৫০ শতাংশ বিশ্বের বাজারে ছাড়বে সিরাম ইনস্টিটিউট।