নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকরা প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে দিল্লিতে ট্রাক্টর নিয়ে মিছিল করার ডাক দিয়েছেন। তা নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লি পুলিশ। ২৬ জানুয়ারি কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলে স্থগিতাদেশ জারি করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই এই রায় দিল দেশের শীর্ষ আদালত। এদিন আদালত মন্তব্য করে, “আমরা এখন বলছি, কৃষকদের দিল্লিতে ঢুকতে দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লি পুলিশ। কাদের ঢুকতে দেওয়া হবে, কতজনকে রাজধানীর রাজপথে পা রাখতে দেওয়া হবে এই সমস্ত কিছুই আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন, তা দেখবে পুলিশ। আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নই।” বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
দিল্লি পুলিশের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলায় কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করে, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে কোনওরকম বিক্ষোভ কর্মসূচী বা মিছিল সেই দিনের গরিমা নষ্ট করতে পারে এবং তা দেশের পক্ষে অবমাননাকর হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, কোনও মিছিল বা প্রতিবাদে দেশের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হয় না। যদিও শীর্ষ আদালতে তারা, দিল্লিতে ঢুকে কোনওরকম ট্রাক্টর, ট্রলি বা কোনও মিছিল যাতে না হয়, তার আবেদন করে। তবে কৃষকদের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, ২৬ জানুয়ারি যে ট্রাক্টর মিছিলের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে, তা কেবলমাত্র দিল্লি-হরিয়ানা সীমানাতেই হবে, সেদিন প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডের সময় বা লালকেল্লায় যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁদের।
এদিকে, মঙ্গলবার কৃষক সংগঠনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের দশম দফার বৈঠকের কথা। বাদল অধিবেশনে আনা কৃষি আইনে বেশ কয়েকটি সংশোধনী আনতে রাজি হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও তা মানতে নারাজ কৃষক সংগঠনগুলি। আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। ২৬ জানুয়ারি ট্রাক্টর মিছিল করে দিল্লিতে মিছিল করার কর্মসূচী ঘোষণাও করা হয়েছে কৃষক সংগঠনগুলির তরফে। যদিও সুপ্রিম কোর্টে সেকথা মানতে নারাজ তারা। শুধুমাাত্র ,সীমানাতেই মিছিল করা হবে বলে দাবি করেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে দড়িটানানটানি অব্যাহত কৃষক সংগঠন ও কেন্দ্রীয় সরকার। নবম দফার বৈঠকের পরেও জট কাটেনি। অন্যদিকে, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। তারমধ্যে কৃষক বিক্ষোভের সুরাহা করতে না পারলে যে, বিরোধী দলগুলির তীব্র আক্রমণের মুখে পড়তে হবে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে কেন্দ্রীয় সরকার। সব মিলিয়ে দেশের অন্নদাতাদের বিক্ষোভ নিয়ে চাপে দেশের শাসকরা।