কলকাতা: বিশ্বভারতীতে গোলমালের জেরে আইন শৃঙ্খলা নিয়ে আতঙ্কিত হয়েছেন রাজ্যপাল। এর আগেও বহুবার রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কিত এবং নিন্দাসূচক মন্তব্য করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একেবারেই অখুশি নন। অতিমারি এবং আমফান দুর্যোগের পরিস্থিতিতে তাদের সামনে থেকে লড়ার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। পুলিশের ভূমিকায় খুশি হয়ে তাদের জন্য একগুচ্ছ নতুন সুযোগ সুবিধা এদিন ঘোষণা করলেন মমতা।
সংক্রমণের ভয় থাকা সত্ত্বেও যেভাবে লড়েছে রাজ্যের পুলিশ বাহিনী তাতে মুগ্ধ হয়েছেন মমতা। প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের পর বহু পুলিশকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, এমনকী মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। এই অবদান মনে রেখে এক নতুন ‘পুলিশ ওয়েলফেয়ার বোর্ড’ গড়ার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে এও জানালেন এবার থেকে প্রতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর রাজ্যে ‘পুলিশ দিবস’ পালিত হবে। পুলিশ ওয়েলফেয়ার বোর্ডের কাজ হবে রাজ্যের পুলিশকর্মীদের প্রতি সামাজিক দায়বদ্ধতা, তাদের এবং তাদের পরিবারের সুযোগ সুবিধার বিষয়গুলির ওপর লক্ষ্য রাখা। এর জন্য জেলায় জেলায় কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানালেন মমতা।
কলকাতা তথা গোটা বাংলায় কাজ করার সুবিধার্থে এই কমিটিকে বসার জায়গা, চালক সহ গাড়ি, এবং আরও নানা পরিকাঠামো প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বোর্ডের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলবেন পুলিশের এসপিরা। এছাড়া নিচুতলার সঙ্গে উঁচুতলার পুলিশকর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য কো-অর্ডিনেটর হিসেবে শান্তনু সিং বিশ্বাসকে নিযুক্ত করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধায় এদিন বলেন, পুলিশ বিভাগে পুরুষ এবং মহিলা কর্মীদের পদোন্নতির প্রক্রিয়ার বিষয়টি এতকাল আলাদা ছিল। সংখ্যায় কম থাকায় পুরুষ পুলিশকর্মীদের মতো দ্রুত পদোন্নতি হত না মহিলাদের। এবার থেকে সেই নিয়ম উঠে গেল।
রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং হেভিওয়েট মন্ত্রীদের নিয়ে আগেই এ সংক্রান্ত এক গ্রুপ অব মিনিস্ট্রি গঠন করা হয়েছিল। সেই গ্রুপের কাছে পুলিশের তরফে কিছু সিদ্ধান্ত বিবেচনার জন্য আবেদন করা হয়। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই এবার পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য ‘কমন গ্রেডেশন সিস্টেম’ চালু করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে আর কোনও রকম বৈষম্য থাকবে না।