তদন্তের ভুলে চাকরি খুইয়েছিলেন, তিন দশক পর নির্দোষ প্রমাণিত হলেন পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর

তদন্তের ভুলে চাকরি খুইয়েছিলেন, তিন দশক পর নির্দোষ প্রমাণিত হলেন পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর

কলকাতা: কোনও কসুর ছিল না তাঁর৷ অন্যায়ভাবেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল তাঁকে। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের বিভাগীয় তদন্তও হয়৷ এর পর নিয়ম শৃঙ্খলার কথা বলে তাঁকে সাসপেন্ড করে দেন তৎকালীন ডিসি৷ কিন্তু নিজেকে নির্দোশ প্রমাণ করতে পাল্টা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেন সাব ইনস্পেক্টর শৈলেন দাস। যদিও অর্থাভাবে মামলার বোঝা বইতে পারেননি৷ মাথায় অপরাধীর তকমা নিয়েই ধীরে ধীরে বয়সের ভাড়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। এই ঘটনার প্রায় ৩ দশক পর হঠাৎই নড়েচড়ে বসল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশে ধুলো ঝেড়ে বার করে আনা হল পুরনো নথিপত্র। সেই নথি ঘেঁটেই ২৯ বছর পর নিজেদের ‘ভুল’ স্বীকার করে নিল লালবাজার।

ঘটনাটি ১৯৯৩ সালের। সেই সময় কলকাতা পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর পদে ইএসডি বিভাগে কাজ করছিলেন শৈলেন দাস। সেই সময়ই শিয়ালদহ জিআরপির একটি মামলায় নাম জড়ায় তাঁর। আদালত অবশ্য তাঁকে জামিন দেন। কিন্তু শুরু হয় পুলিশের বিভাগীয় তদন্ত। সেই তদন্তেই শৈলেনকে দোষী সাব্যস্ত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়৷ 

কিন্তু লালবাজারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি শৈলেন। সঠিক বিচার চেয়ে স্যাটের দ্বারস্থ হন তিনি। স্যাটে তাঁর পক্ষেই রায় দেয়৷ কিন্তু সেটা আবার মানতে পারেনি রাজ্য। তাই স্যাটের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যায় পুলিশ। কিন্তু মামলা চলাকালীনই অসুস্থ হয়ে পড়েন শৈলেন৷ তার উপর আর্থিক দুর্গতির কারণে আর মামলা চালাতে পারেননি। 

সেই মামলার ২৯ বছর পর পুরনো ফাইল খুঁজে আনল আদালত। এখন ৭০-এর কোঠায় পৌঁছে বদনাম ঘুঁচল প্রাক্তন ইন্সপেক্টরের। আদালতের নির্দেশে ধুলো পড়ে যাওয়া ফাইল ঘেঁটে যে নথি মিলল, তা দেখে লবাজারের বড়কর্তারা জানিয়ে দেন, লঘু পাপে গুরুদণ্ড পেয়েছিলেন শৈলেন দাস। পুলিশের চাকরি থেকে তাঁকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, তা মেনে নিল লালবাজার। এর জন্য ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে প্রাক্তন সাব ইনস্পেক্টরের কাছে৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *