কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় উঠে আসছে ব়্যাগিং-এর অভিযোগ৷ সত্যিই কি ৯ অগাস্ট রাতে ব়্যাগিং-এর শিকার হয়েছিলেন মৃত পড়ুয়া? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ উঠে এল পুলিশের হাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলার বারান্দার কোণ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি নীল রঙের হাফপ্যান্ট এবং গেঞ্জি। ওই বারান্দা লাগোয়া ৬৮ নম্বর ঘরই ছিল ‘নির্যাতিত’ ছাত্রের রুম। লালবাজার সূত্রে খবর, এ বিষয়ে হোস্টেলের আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হয়৷ অর্থনীতি বিভাগের এক পড়ুয়া জানান, ওই পোশাকগুলি মৃত ছাত্রেরই৷ যদিও তিনি সত্য বলছেন কিনা, তা যাচাই করে দেখে নিতে চাইছেন তদন্তকারীরা। ওই ছাত্রের বয়ান সত্যি হলে তা ব়্যাগিংয়ের অভিযোগকে আরও জোরাল করবে৷
গত ৯ অগাস্ট রাতে মেন হস্টেলের তিনতলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে যান বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র৷ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বৃহস্পতিবার ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। অভিযোগ, হস্টেলের নীচ থেকে যখন তাঁকে উদ্ধার করা হয়, তখন সে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র ছিল৷ যা ব়্যাগিং-এর অভিযোগকে আরও বেশি করে উস্কে দেয়৷ পরিবারের দাবি, ঘটনার রাতে জোর করে তাঁকে বিবস্ত্র করানো হয়েছিল৷ বেশ কিছু বয়ানে উঠে এসেছে মানসিক নির্যাতনের বর্ণনাও৷
এই দাবিও করা হয়েছে যে, ঘটনার আগে ওই ছাত্র নাকি বার বার বাথরুমে যাচ্ছিলেন৷ তাই তাঁর গায়ে শুধু গামছা জড়ানো ছিল। কিন্তু প্রশ্ন হল, তাহলে তাঁর পোশাক কেন বারান্দায় পড়েছিল? তা হলে কি জোর করে বিবস্ত্র করানো হয়েছিল ওই ছাত্রকে? নাকি ‘মানসিক চাপে’ নিজেই বিবস্ত্র হয়েছিলেন? যদি বাথরুম যাওয়ার জন্যেই পোশাক খুলে থাকেন, তা হলে তা সেখানেই থাকার কথা। বারান্দার এক কোণ এল কেন? পোশাক ভিজে গেলেও তা বাথরুমেই থাকত। এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারী অফিসাররা। এই সব প্রশ্নের উত্তর মিললেই ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। সেই রাতে সত্যই ব়্যাগিং হয়েছিল কিনা, তাও স্পষ্ট হয়ে যাবে৷ হস্টেলে সিসিটিভি না থাকায় ছাত্রদের বয়ানই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত অর্থনীতি বিভাগের ওই পড়ুয়ার বয়ানের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে।