তিরুপতি: সারাজীবন ধরে বহু কষ্টে নানা ত্যাগ স্বীকার করে তিলে তিলে সন্তানকে বড় করে তোলেন মা বাবা। সন্তানের মুখের ভাত হোক বা উপযুক্ত শিক্ষা কোনো ক্ষেত্রেই এতটুকু ঘাটতি রাখতে চান না তাঁরা। আর সে কারণেই বড় হয়ে যাওয়ার পর বৃহত্তর জগতে সন্তানের সাফল্য সবচেয়ে বেশি খুশি করে মা বাবাকেই। এদিন তেমনই এক নিদর্শন দেখা গেল সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে।
বাবা পুলিশে চাকরি করেন, কিন্তু মেয়ে সেই রাজ্যের পুলিশ ডিপার্টমেন্টেই উচ্চতর পোস্টে চাকরি পেয়েছেন সদ্য। ফলে ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে নিজের মেয়েকে দেখে সমীহসূচক স্যালুট করলেন পুলিশ আধিকারিক বাবা। মেয়ের সাফল্যে গর্বিত বাবার ওই স্যালুট অভিবাদনের ছবি এদিন ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর বলা বাহুল্য তা ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে নেটিজেনদের।
জানা গেছে, ওই পুলিশ ইন্সপেক্টরের নাম শ্যাম সুন্দর। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতির বাসিন্দা। তাঁর মেয়ে ইয়েন্দলুরু জেসি প্রশান্তি গুন্টুর জেলার ডিএসপি। এদিন রাজ্য পুলিশের একটি ডিউটি মিট অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা তদারক করছিলেন প্রশান্তি। আর তখনই নাকি আচমকা এক পুলিশ কর্মচারী এসে তাঁকে স্যালুট করেন। প্রথা অনুযায়ী তাঁকেও পাল্টা স্যালুট করেন প্রশান্তি, কিন্তু পরমুহূর্তেই নিজের বাবাকে চিনতে পারেন তিনি। বাবা ও মেয়ের মধ্যে এরপর এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। দুজনেরই চোখের কোণ চিকচিক করে ওঠে। তবে সঙ্গে সঙ্গেই আবেগ চেপে নিজেদের সংযত করেন শ্যাম সুন্দর এবং প্রশান্তি।
সূত্রের খবরে জানা গেছে, তিরুপতি বাঁধ এলাকায় কর্তব্যরত শ্যাম সুন্দর সেদিন তাঁর মেয়ের সেখানে উপস্থিত হওয়ার কথা জানতেন না। কাজ করতে করতে হঠাৎই মেয়ের প্রতি নজর যায় তাঁর। উচ্চ পদাধিকারী হওয়ায় মেয়ের জন্য নতুন করে গর্বে ভরে যায় শ্যাম সুন্দরের বুক। তিনি প্রশান্তিকে স্যালুট করতে এগিয়ে যান। বাবা ও মেয়ের এই অভিনব কাণ্ড ততক্ষণে ক্যামেরাবন্দী করে ফেলেছিলেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকেই। সেই ছবিই পোস্ট করা হয় অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে। মুহূর্তে ভাইরাল এই পোস্ট নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় নেট পাড়ায়।
এ বিষয়ে শ্যাম সুন্দর জানিয়েছেন, “সন্তান সফল হলে এবং দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করলে কোন বাবই না খুশি হন? আমি নিশ্চিত যে আমার মেয়ে দক্ষ হাতে কর্তব্য পালন করতে পারবে।” মেয়ে প্রশান্তি জানিয়েছেন বাবা বরাবরই তাঁর অনুপ্রেরণা।