তমলুক: ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল বদলের রাজনীতি অব্যাহত। গত ১৯ ডিসেম্বর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর তৃণমূলকে বিদায় জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে যোগ দেন বিজেপিতে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপির প্রতিটা জনসভায়৷ সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যা নেই বরং ‘তোলাবাজ ভাইপো’কে নিয়ে সমস্যা আছে৷ আজ মেদিনীপুরে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরোক শুভেন্দু দাবি করেন, “ভাইপোর পুলিশ ফোন ট্যাপ করছে।’’ ফোন ট্যাপ করার অর্থে সাংবাধানিক দিক থেকে রাইট টু প্রাইভেসি (ব্যক্তিগত তথ্যের) অধিকার ক্ষুন্ন হওয়ার কার্যত অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু৷ যদিও, ডিজিটাল মিডিয়ায় ফোন ট্যাপ বা ডিজিটাল গতিবিধির উপর নজরদারি আকছারই ঘটে চলেছে৷ কিন্তু এই প্রথম শুভেন্দু অধিকারীকে মহিষাদলের জনসভায় এই বিষয় নিয়ে বলতে শোনা গেল৷
শুভেন্দু নিজের দল বদলের কারণ হিসাবে জানান, তিনি চান কেন্দ্রে ও রাজ্যে একই সরকার থাকুক, না হলে রাজ্যে কোনও শিল্প আসবেনা। তিনি আরও জানান তাঁর সঙ্গে ‘ডিল’ হয়েছে, প্রত্যেক বছর স্কুল সার্ভিস এবং কলেজ সার্ভিস পরীক্ষা শুরু হবে, বেকাররা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাবে। এছাড়াও এদিন মহিষাদলের সভা থেকে আরও একটি ‘ডিল’ ঘোষণা করেন শুভেন্দু। ‘ডিল’ অনুযায়ী প্রতিটা স্কুলের সামনে লেখা থাকবে বাংলার গর্ব নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। সব জায়গায় সাংস্কৃতিক চার্চা করার আগে লেখা থাকবে বাংলার গর্ব বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে তৃণমূল ছেড়েই তিনি পাইলট কার সহ রাজ্যের নিরাপত্তা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগেই তাঁর জন্য আবার জেড ক্যাটাগরি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ব্যবস্থা করা হয় বুলেটপ্রুফ গাড়ির। কিন্তু দল বদলের পর সাংসদ না থাকায় তাঁকে মন্ত্রীত্বের পদ দেওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু পুরষ্কার হিসাবে এই নেতাকে জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান করা হয় বিজেপির তরফে৷ অবশ্য দল বদলের পর থেকেই শুভেন্দু নিজের পুরোনো দলের সাংসদ, চেয়ারম্যানদের ‘দাদার অনুগামী’ হিসাবে বিজেপিতে যোগদান করানোর প্রক্রিয়া অব্যহত রেখেছেন৷ বিধানসভা ভোটের আগে প্রতিটা জনসভার শুভেন্দু তৃণমূলের কেলেঙ্কারি ফাঁসের হুমকি দিচ্ছেন। অখন্ড মেদিনীপুর এবং বিশেষত নন্দীগ্রামকেই মূল হাতিয়ার করছেন তিনি৷ তবে আজ জনসভায় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দল বদলের কারণ হিসাবে, তিনি চান কেন্দ্রে ও রাজ্যে একই সরকার থাকুক, না হলে রাজ্যে কোনও শিল্প আসবে না৷ শুভেন্দুর এই মন্তব্যে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ প্রশ্ন উঠছে, বাংলায় উন্নয়নের স্বার্থে কেন্দ্রে যতবার সরকার পরিবর্তন হবে, ততবারই কি দল বদল করবেন শুভেন্দু অধিকারী?