ভারতে তৈরি কফ সিরাপ খেয়ে গত কয়েক মাসে বিশ্বে প্রায় শ’তিনেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতে তৈরি সাতটি কফ সিরাপের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মোট ২০টি কফ সিরাপের উপাদান পরীক্ষানিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে হু। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের ৭টি সংস্থা। WHO’র প্রাথমিক ধারণা, এই কফ সিরাপগুলি উপাদান থেকে বিষক্রিয়া হতে পারে।
গত কয়েক মাসে কফ সিরাপ থেকে বিষক্রিয়ায় অন্তত তিনশো শিশুর মৃত্যু হয়েছে গোটা বিশ্ব জুড়ে। যার বেশিরভাগই পশ্চিম আফ্রিকার। এই পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলিতে ভারত থেকে বহু কফ সিরাপ যায়। কিছুদিন আগে ভারতীয় কফ সিরাপ খেয়ে উজেবেকিস্তান এবং জাম্বিয়ায় বহু শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। তারপরই ভারতীয় কফ সিরাপগুলির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয় হু।
নয়ডার মারিয়ন বায়োটেক, হরিয়ানার মেডেন ফার্মাসিউটিক্যাল, চেন্নাইয়ের গ্লোবাল ফার্মা, পাঞ্জাবের ফার্মাচেন সহ কয়েকটি সংস্থার তৈরি কফ সিরাপ খেয়ে সম্প্রতি শিশু মৃত্যুর খবর সামনে আসে। সংস্থারগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, পশ্চিম আফ্রিকার নানা দেশে বিষাক্ত ওষুধ রপ্তানি করেছে তারা। সেই সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের সতর্কবার্তায় বলে, “এই কফ সিরাপগুলির মধ্যে ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও ইথিলিন গ্লাইকল নামের দূষক পদার্থের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি। সেই বিষাক্ত কেমিক্যাল শিশুদের শরীরের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। কফ সিরাপ খাওয়ার ফলে পেট ব্যথা, বমির মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে শিশুদের মধ্যে। পরবর্তীতে কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
গত বছর মন অভিযোগ সামনে আসার পরপরই সংশ্লিষ্ট কফ সিরাপ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ওষুধ রপ্তানি নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি করে DGCA। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়, রপ্তানির আগে সব সিরাপ সরকারি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করাতে হবে। রিপোর্ট ঠিক থাকলে তবেই মিলবে বিদেশে রপ্তানির অনুমতি। এবার ৭ ভারতীয় কফ সিরাপের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।