নয়াদিল্লি: দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ‘দানে’ পি এম কেয়ার্স ফান্ড ক্রমাগত ফুলে ফেঁপে উঠছে, তথ্যের অধিকার আইনের মাধ্যমে সম্প্রতি এই খবর সামনে এসেছে৷ দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি আরটিআই-র জবাবে যা বলেছে, তার ভিত্তিতে একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম। যেখানে নাম রয়েছে নবোদয় স্কুল থেকে আইআইটি, আইআইএম, একাধিক কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের।
গত মাসের ১৯ তারিখ ওই সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, পিএম কেয়ার্স ফান্ডে ৩৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা তাদের ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি’ তহবিলগুলি একসঙ্গে করে ২,১০৫ কোটি টাকা দেয়। শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের বেতন থেকেই এই ‘স্বেচ্ছায় দান কর্মসূচি’ চলেছে বলে দাবি করা হয়েছে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে পেনশনভোগীদের থেকে কিংবা ছাত্রছাত্রীদের থেকেও এই টাকা তোলা হয়েছে। ২৮ তারিখ এই তহবিলের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মাত্র ৪দিনের মাথায় সেখানে ৩,০৭৬.৬২ কোটি টাকা জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ৩,০৭৫.৮৫ কোটি টাকাই ‘স্বেচ্ছায় দান’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্র সরকারের ওবেবসাইটে।
অতিমারী পরিস্থিতির মোকাবিলার নামে এই তহবিল খুলেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু অতিমারীর জন্য কত টাকা সেখান থেকে খরচ হয়েছে, আদৌ হয়েছে কিনা তার কোন হিসাব নেই। সিপিআইএম সহ একাধিক বিরোধী দলগুলি আগেই এ বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের জবাব চেয়েছিল। কিন্তু মোদী সরকার তা না জানালেও তথ্যের অধিকার আইনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির থেকে এর জবাব পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি মিলিতভাবে ২১ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা দিয়েছে পি এম কেয়ার্স ফান্ডে। ২০টি আইআইটি থেকে ৫ কোটি ৪৭ লক্ষ, ১০টি আইআইএম থেকে ৬৬.০৬ লক্ষ, ৭টি আইআইএসআর থেকে ৪৫.৭৯ লক্ষ, ১১টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩.৩৯ কোটি, ২টি আইআইআইটি থেকে ৮.১৫ লক্ষ, এনসিইআরটি থেকে ৩৫.২২ লক্ষ, ৯টি এনআইটি থেকে ১.০১ কোটি, এআইসিটিই থেকে ১৩.৮০ লক্ষ, জেআইপিএমইআর (পুদুচেরি) থেকে ৭.৪১ লক্ষ, আইআইএসসি (বেঙ্গালুরু) থেকে ২৫.৬৪ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে পি এম কেয়ার্স ফান্ডে। অন্যদিকে ইউজিসি সেখানে দান করেছে ৭.৪১ লক্ষ টাকা।
গ্রামীণ এলাকায় ৬০০’রও বেশি স্কুল চালায় ‘নবোদয় বিদ্যালয় সমিতি’ বা এনভিএস। এই সংস্থা কর্মীদের অনুদানের ভিত্তিতে ৭ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছে ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা, সিএসইউ দিয়েছে ২৭ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা, কোঝিকোড় আইআইএম ৩৩.৩৫ লক্ষ দিয়েছে। খড়গপুড় আইআইটি এক কোটিরও বেশি অর্থ ‘দান’ করেছে। যার ৮৯ হাজার টাকা এসেছে পেনশনভোগীদের পকেট থেকে।