লক্ষ্ণৌ: করোনা অতিমারীর আবহে যে চরম আর্থিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল গোটা দেশ, তা থেকে ক্রমশ স্বাভাবিকের পথে হাঁটছে জনজীবন। ভ্যাকসিনের আবিষ্কারে এখন করোনার উদ্বেগ দূর হয়েছে অনেকটাই। এমতাবস্থায় দেশের নুইয়ে পড়া অর্থনীতিকে ফের চাঙ্গা করে তোলাই সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। অতিমারী পরবর্তী সময়ে দেশ জুড়ে বেকার সমস্যাটা ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে, এদিন তারই এক নমুনা সামনে এল উত্তর প্রদেশে।
পুলিশ বিভাগে পিওনের কাজে শূন্যপদ ছিল মাত্র ৬২টি। তা পূরণের জন্য যথারীতি দেওয়া হয়েছিল বিজ্ঞাপনও। কিন্তু দেখা গেল, মাত্র এই কটি পদের জন্যেই আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ৯৩ হাজার। অপ্রত্যাশিত এই আবেদন সংখ্যায় স্বভাবতই চমকে গিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখানেই চমকের শেষ নয়। জানা গেছে, পিওনের কাজে ৯৩ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে প্রায় ৩৭০০ জন পিএইচডি ডিগ্রির অধিকারী। চাকরির বাজারের এই ছবি নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলবে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশ বিভাগের পিওন পদের জন্য যে শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন তা পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের কাছে অপমানজনকই বটে। মাত্র পঞ্চম শ্রেণী উত্তীর্ণ হলেই এখানে করা যেত আবেদন। এছাড়া প্রার্থীকে সাইকেল চালানো জানতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বেকারত্বের জ্বালায় ‘কোনো কাজই ছোটো নয়’-এর সেই চিরকালীন নীতিবাক্য স্মরণ করেই আবেদন জানিয়েছেন চার হাজারের কাছাকাছি পিএইচডি।
তবে শুধু পিএইচডি ডিগ্রি নয়, পিওন পদে আবেদন জানিয়েছেন বাকিরাও। জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর ধরেই নাকি ফাঁকা পড়ে ছিল এইসমস্ত পদ। নিয়োগ ছিল বন্ধ। পিএইচডি ছাড়াও মোট ৫০ হাজার স্নাতক এবং ২৮ হাজার স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী আবেদন জানিয়েছেন পিওনের চাকরির জন্য। মাসিক ২০ হাজার টাকা বেতনের এই সরকারি চাকরি হাতছাড়া করতে নারাজ কেউই। বস্তুত, উত্তরপ্রদেশ শুধু নয়, দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকেও কর্মসংস্থানে সরকারের ব্যর্থতার ছবি উঠে এসেছে একাধিক বার। আগেও দেখা গেছে সামান্য যোগ্যতা কাজে আবেদন জানিয়েছেন উচ্চশিক্ষিতরা।