চব্বিশের লোকসভার আগে বিজেপিকে আটকাতে জোট বাঁধছে বিরোধীরা। পটনায় নীতীশ কুমারের বাসভবনে বৈঠকে বসে ১৫টি বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রী। বিরোধী জোটের সেই বৈঠককেই নিশানা করলেন অমিত শাহ। পটনায় বিরোধী জোটের বৈঠককে ফটোসেশন বলে কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিরোধীদের জোট বাঁধার সম্ভাবনাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে বিজেপির চাণক্য বলেন, ‘‘ওখানে তো ফোটোসেশন হচ্ছে। ২০১৪-এর লোকসভা ভোটে কোনও বিরোধী জোটের সম্ভাবনাই নেই।’’
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি বিরোধী জোটের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি খারিজ করে দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এমনকি,বিরোধীরা জোট বাধলেও তাঁদের চিন্তার কোনও কারণ নেই বলেও দাবি করেন। বিরোধীদের ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘আমি ওই বিরোধী নেতাদের বলতে চাই যে, আপনাদের ঐক্য প্রায় অসম্ভব এবং শেষ পর্যন্ত যদিও বা তা বাস্তব হয়, অনুগ্রহ করে জনগণের সামনে সেই ঐক্য তুলে ধরুন।“ চব্বিশের লোকসভা ভোটে ৩০০-র বেশি আসন নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকার প্রত্যাবর্তন করবে বলে জোর গলায় দাবি করেন অমিত শাহ। শুক্রবার দুপুরে পটনায় নীতীশের বাসভবনে এককাট্টা হয়েছে ১৫ টি বিরোধী দল। আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার বিষয়ে আলোচনায় বসেন নেতা নেত্রীরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে। আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি সভানেত্রী মেহবুবা মুফতি, ডিএমকে প্রধান তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদবের মতো নেতারা। অসুস্থ শরীরেও বৈঠকে যোগ দেন লালু প্রসাদ যাদব।
একদিকে যখন বিজেপি বিরোধি জোট বাঁধতে পটনার বৈঠকে যোগ দিয়েছেন রাহুল গান্ধী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তার ঠিক আগেই, দিল্লির আমলাতন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কেন্দ্রের বিতর্কিত অর্ডিন্যান্স নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি। আপ মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা কক্কর বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, ওই অর্ডিন্যান্স নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে কংগ্রেসের গোপন সমঝোতা হয়েছে। তাই অর্ডিন্যান্স বিরোধিতায় সামিল হবে না কংগ্রেস।’’
মোদী সরকারের অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতায় কংগ্রেসের সমর্থন না-পেলে পটনা বৈঠক বয়কটের হুমকি দিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নীতীশ কুমারের অনুরোধে তিনি সিদ্ধান্ত বদলান। যদিও আপের অভিযোগের জবাবে মুখ খুলেছে কংগ্রেস। দিল্লির কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত বলেন, ‘‘কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব পটনায় গিয়েছেন, বিজেপি-বিরোধী ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে শামিল হওয়ার বার্তা দিতে। অর্ডিন্যান্স নিয়ে কেজরীওয়ালের সঙ্গে দর কষাকষি করতে নয়।’’
বিরোধীদের এই মহাবৈঠক বিজেপিকে ঠেকাতে কতটা ফলপ্রসূ হবে, সেটাই এখন দেখার।