কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারী হোক বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, একুশের নীলবড়ি দখলের লড়াইয়ে ভোট বৈতরণী পার করার জন্য সকলেই পাখির চোখ করছেন কর্মসংস্থানকে। একদিকে যখন বাংলায় ক্ষমতা দখলের জন্য গেরুয়া শিবিরের মূল হাতিয়ার রাজ্যে বেকারত্বের অভিযোগ, অন্যদিকে তখনই কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিই অস্ত্র ঘাসফুলেরও। এমনকি ঘরে ঘরে কাজের দাবিকে নির্বাচনী ইস্তেহারে প্রথম সারিতে রেখেছে বামেরা।এমতাবস্থায়, ভোটের পর কী হবে তা জোর গলায় বলা না গেলেও বাংলার প্রাক-নির্বাচনী আবহে চারিদিক থেকে শুধুই ভেসে আসছে ঢালাও কর্মসংস্থানের আশ্বাস।
গত বুধবার পায়ে চোট পাওয়ার পর আজ ফের হুইলচেয়ারে চেপে রাস্তায় বেড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়ার এক জনসভা থেকে নির্বাচিত প্রার্থীর সমর্থনে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই গলা ফাটান তিনি। আর যথারীতি তৃণমূল সুপ্রিমোর এদিনের ভাষণে ছিল কর্মসংস্থানের উজ্জ্বল আশ্বাস। সভা মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, ” পুরুলিয়ায় আমরা শিল্পের জন্য ৬৪ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছি। অনেক ছেলেমেয়েদের চাকরি হবে।আগামী দিনে ১০ লক্ষ স্বনির্ভর মহিলার জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার লোনের ব্যবস্থা করব আমরা।” এখানেই শেষ নয়, উর্বর জমিতে গাছ পুঁতে মহিলাদের জন্য স্বনির্ভরতার প্রকল্প চালু করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
কর্মসংস্থানের কথা শোনা গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এদিন এক দলীয় জনসভা থেকে ভোট পরবর্তী সময়ের জন্য বড়সড় আশ্বাস দেন তিনি। বলেন, ভোট মিটলে আগামী এক বছরের মধ্যে বাংলায় বেকার সংখ্যা আমরা শূন্য করে দেওয়া হবে। তৃতীয় বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসলেই বাংলার মানুষের বেকারত্ব ঘুচবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। এদিকে কর্মসংস্থানের আশ্বাসে যে কম যায় না গেরুয়া শিবিরও, এদিন শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য থেকে তা পরিষ্কার হয়ে যায়। এদিন নিমতৌরির জনসভা থেকে গেরুয়া নেতা স্পষ্টই জানান, “ভারতীয় জনতা পার্টি কথা দিয়েছে ক্ষমতায় এলে প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষার বন্দোবস্ত করবে।” শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতনের ক্ষেত্রে কেন্দ্র রাজ্য বৈষম্য দূর করার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে ভোটের আগে সকলের মুখেই গুরুত্ব পাচ্ছে কর্মসংস্থান। এখন দেখা যাক রাজ্যের এই মুহূর্তের বেকারত্বের পরিসংখ্যান ঠিক কী বলছে?
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যানের দিকে চোখ রাখলে দেখা যায়,গত মাসে বাংলায় বেকারত্বের পরিমাণ বেড়েছে। বর্তমানে এ রাজ্যে বেকারত্বের হার ৬.৯%, যা গোটা দেশের বেকারত্বের হারের চেয়ে ০.৪% বেশি। এখন কর্মসংস্থানের নৌকায় ভর করে ভোট বৈতরণী পার করায় কোন দল সফল হয়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২ মে ভোটের ফলাফল পর্যন্ত।