৪০ বছর পর আংশিক দৃষ্টিশক্তি ফেরত এল

৪০ বছর পর আংশিক দৃষ্টিশক্তি ফেরত এল

সুইৎজারল্যান্ড: দীর্ঘ ৪০ বছর পর আংশিক ভাবে চোখে দেখতে পাচ্ছেন এক দৃষ্টিশক্তিহীন ব্যক্তি। সম্প্রতি অপটোজেনেটিক থেরাপি ও বিশেষ চশমার ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি ৫৮ বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন৷ ঘটনাটি অবশ্য এদেশের নয়, সুদূর সুইৎজারল্যান্ডের৷ সুইজারল্যান্ডের গবেষকেরা ওই ব্যক্তির আংশিক দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে সক্ষম হয়েছেন। 

সেখানকার এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক খবরে জানা গিয়েছে, ৪০ বছর ধরে দৃষ্টিশক্তিহীন ওই ব্যক্তি রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা নামে একটি রোগে ভুগছিলেন৷ এই চক্ষুরোগটি স্নায়ুজনিত, এতে চোখের ফটোরিসেপ্টরগুলোর ক্ষতি হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।  চোখের রেটিনা কোষকে পুনোর্জীবিত করতে এক ধরনের জিন থেরাপি ব্যবহার করেছেন সেখানকার গবেষকরা। এই গবেষণা সংক্রান্ত তথ্য নেচার মেডিসিন ম্যগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে৷ এতে অভ্যস্ত করার জন্য ওই ব্যক্তিকে বেশ কয়েক মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ প্রায় সাত মাস পর তাঁর দৃষ্টিশক্তি উন্নত হতে থাকে৷ এই পরীক্ষানিরীক্ষা চলার সময় গবেষকরা মস্তিষ্কের গতিবিধির ওপরও নজর রেখেছিলেন৷ একটি টেবিলের ওপর একটা জিনিস রেখে ওই রোগীর থেকে জানতে চান, টেবিলে কিছু রয়েছে না নেই৷ ওই ব্যক্তি তাঁর সামনে রাখা জিনিসটি প্রায় ৭৮ শতাংশ দেখতে সক্ষম হন৷ এরপরই গবেষণার সাফল্যও সামনে আসে৷ এই থেরাপি প্রয়োগ করার পর চশমা পরা অবস্থায় কোনও জিনিস শনাক্ত, অবস্থান নির্ণয় বা গণনা করতে পারেন রোগী। ঘরের ব্যবহার করা জিনিসপত্র শনাক্ত করতে পারেন। এমনটাই বলছেন গবেষকেরা৷

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষুবিজ্ঞানের অধ্যাপক রবার্ট ম্যাকলারেন বলেন, ‘জিন থেরাপি ব্যবহারের মাধ্যমে আংশিক দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। এটা উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এই পদ্ধতি  ভবিষ্যতে আরও পরীক্ষীনিরীক্ষা করা গেলে, অপটোজেনেটিক থেরাপি এই ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে পরিণত হবে।’ গবেষকেরা দাবি করেছেন, এ ধরনের থেরাপি মানুষের ওপর সফলভাবে প্রয়োগের ঘটনা এটাই প্রথম।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × one =