কলকাতা: প্রতি বছর পুজোর এই কটা দিন তাঁর কাটত অতি ব্যস্ততার মধ্যে৷ কিন্তু গত কয়েক দিনে পরিস্থিতি অনেকটা বদলে গিয়েছে৷ লৌহকপাটের ভিতরের জীবনের সঙ্গে যার কোনও মিল নেই। ফি বছর শারদোৎসবে নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপের খুঁটিনাটি বিষয়ে শেষ কথা ছিলেন তিনি৷ অথচ প্রেসিডেন্সি জেলে তাঁর ওয়ার্ডের ঠিক পিছনেই আয়োজিত জেলের পুজোয় তাঁর উপস্থিত থাকার আবেদনটুকুও গ্রহণ করা হল না৷ এছড়াও পার্থর উপরে অধিকাংশ বন্দি ক্ষুব্ধ। তাঁকে দেখতে পেলে সহবন্দিরা কটূক্তিও করছেন বলে জেল সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন- নবমী পর্যন্ত প্রায় সারারাত মেট্রো, স্বস্তিতে দর্শনার্থীরা
প্রতি বছরের মতো এবছরও প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়েছে৷ রবিবার মায়ের বোধনের দিন মণ্ডপে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ কিন্তু জেল-কর্তৃপক্ষ তাঁর সেই আবেদন পত্রপাঠ খারিজ করে দেন। জেল সূত্রে খবর, মহাষষ্ঠীর দুপুরেই পার্থর আবেদন খারিজ হয়ে যায়৷ আর বিকেলে জানা যায় তাঁর পাড়ার পুজো এ বছর ‘বিশ্ব বাংলা’ পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কারারক্ষীদের একাংশের কথায়, ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় সেলের ভিতরে রাখা লোহার খাটের উপরে মাথা নিচু করে বসে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তাঁকে কিছুটা বিমর্ষও দেখাচ্ছিল৷ সপ্তমীও কাটে মনখারাপ নিয়েই৷ রাতে খাবার খেয়েই শুয়ে পড়েন৷
তবে পুজোয় বেশ খোশ মেজাজেই আছেন একই মামলায় অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়৷ কয়েক দিন আগে এক আইনজীবী এবং এক আত্মীয় এসে চারটি নতুন শাড়ি আর কিছু পোশাক দিয়ে গিয়েছিলেন৷ ওই শাড়ি পরেই পুজোর আনন্দে মাতেন অভিনেত্রী৷ ষষ্ঠীর দুপুরেই নতুন শাড়ি পরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুজোর আয়োজনে সামিল হন। জানা গিয়েছে, দিন পনেরো ধরে মনখারাপ করে বসেছিলেন অর্পিতা৷ কান্নাকাটিও করছিলেন৷ তবে পুজোর আনন্দে সামিল হয়ে তিনি অনেকটাই স্বাভাবিক৷ অর্পিতা জানিয়েছিলেন, বেলঘরিয়ায় নিজের পাড়ার পুজোয় মা দুর্গা আর নিজের অসুস্থ মাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে তাঁর।
ষষ্ঠীর দিন পুজো উদ্বোধন হতেই অবশ্য মন খারাপ কিছুটা হলেও ফিকে৷ ষষ্ঠীর পর সপ্তমীতেও নতুন শাড়িতে সেজেছিলেন অর্পিতা৷ সহবন্দিদের সঙ্গে পুজোর আয়োজনে হাতও লাগান৷ বেশ কয়েক বছর ধরেই পার্থর নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজোয় ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ ছিলেন অভিনেত্রী। যদিও জেলে নাকতলার পুজো নিয়ে বিশেষ কথা বলতে শোনা যায়নি তাঁকে। বরং তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে নিজের পাড়ার কথা৷ সহবন্দিদের জানিয়েছেন, পাড়ার পুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন তিনিই। তাঁর অনুপস্থিতিতে এবার কী ভাবে আয়োজন হচ্ছে তা জানতে বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে তাঁর৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>