অর্পিতার সন্তানের দায়িত্ব পার্থর! ‘অপা’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কাহিনী খোলসা ভরা এজলাসে

অর্পিতার সন্তানের দায়িত্ব পার্থর! ‘অপা’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কাহিনী খোলসা ভরা এজলাসে

কলকাতা: খাতায় কলমে তাঁরা নাকি কাকা-ভাইঝি৷ নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে এমনই দাবি করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী।যদিও তাঁরা সকলের কাছে ‘যুগলে’ পরিচিত ‘অপা’ নামে৷ এমনকি অর্পিতার সন্তানের দায়িত্বও নিতেও পিছপা হননি তৃণমূলের একদা সেকেন্ড ইন কমান্ড৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর রসায়ন নিয়ে আদালতে এমনই বিস্ফোরক দাবি করল ইডি৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক এতটাই গভীর ছিল যে, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দত্তক নেওয়া সন্তানের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন ‘কাকু’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে জানান, সন্তান দত্তক নেওয়ার জন্য অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ছাড়পত্র দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কিছু হলে ওই শিশুর দায়িত্ব নেবেন তিনি। সেই সন্তান ছেলেই হোক আর মেয়ে৷

কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলায় কেন উঠে এল অর্পিতার সঙ্গে তাঁর রঙিন সম্পর্কের তথ্য? আসলে মামলা চলাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বলেন, নিয়োগ দুর্বীতির তদন্তে নেমে যে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে৷ সেই টাকার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই টাকাটা তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধারও হয়নি।

এর পরই ইডি-র আইনজীবী আদালতে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেন৷ ইডি-র তরফে বেশ কিছু নথিও আদালতে পেশ করা হয়। তাতে বলা হয়, সন্তান দত্তক নিতে চেয়েছিলেন পার্থের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা। যেখানে ‘নমিনি’ হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। অর্থাৎ অর্পিতার কিছু হলে তাঁর দত্তক সন্তানের যাবতীয় দায়িত্ব নেবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালতে ইডি-র যুক্তি, যদি তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা নাই থেকে থাকে, তাহলে এত বড় সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হল? ইডি-র আইনজীবী আরও বলেন, আসলে উদ্ধার হওয়া টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরই। তাঁদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ছিল বলেই অর্পিতার বাড়িতে সেই টাকা রেখেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী৷ 

মামলার শুনানি পর্বে ইডি-র আইনজীবীর মন্তব্য, “স্বাধীন ভারতে এমন ঘটনা আগে দেখা যায়নি, যেখানে ৫৪ কোটিও বেশি টাকার মালিকানা ছাড়ার জন্য কার্যত মারামারি করছেন দুই ব্যক্তি। তঁদের দুজনেরই বক্তব্য, এই টাকা তাঁদের নয়।’’ ফিরোজ এডুলজির বক্তব্য, শুধু অর্পিতাই নন, একাধিক ব্যক্তিকে এই দুর্নীতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তাঁর দাবি, “ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু থেকে অর্পিতার কাকু হয়ে উঠেছিলেন পার্থ। তাঁর নির্দেশ মেনে কাজ করতেন অর্পিতা৷ গোয়া এবং থাইল্যান্ড, অর্পিতার সঙ্গে স্নেহময় দত্তকে পাঠিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই।” এই মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখার পর ইডি-র দাবি, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতির কিংপিন। অর্পিতা মুখোপাধ্যায় আক্ষরিক অর্থে এই দুর্নীতির রানি।” 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 13 =